জল ছাড়া নিয়ে বৈঠক হবে রাজ্য, ডিভিসি-র

গত বছর বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতির দায় দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) উপর চাপিয়েছিল রাজ্য। ডিভিসি অবশ্য পত্রপাঠ সে দায় ঝেড়ে ফেলে। এ বার এমন চাপানউতোরের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে জন্য আগেভাগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিল ডিভিসি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৬ ০১:৫৮
Share:

দুর্গাপুরে অ্যান্ড্রু ল্যাংস্টি। —নিজস্ব চিত্র।

গত বছর বর্ষায় বন্যা পরিস্থিতির দায় দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (ডিভিসি) উপর চাপিয়েছিল রাজ্য। ডিভিসি অবশ্য পত্রপাঠ সে দায় ঝেড়ে ফেলে। এ বার এমন চাপানউতোরের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সে জন্য আগেভাগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিল ডিভিসি। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যান্ড্রু ল্যাংস্টি বলেন, ‘‘জল ছাড়া নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আগামী ৯ জুন বৈঠক হবে। সেখানেই বিশদে কথা হবে।’’ ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, জলাধারগুলির জলধারণ ক্ষমতা, কত কিউসেক পর্যন্ত জল ছাড়লে বিপদের সম্ভাবনা থাকে না, অতিরিক্ত বর্ষণ হলে কী ভাবে বিপদের সম্ভাবনা ন্যূনতম করে নির্বিঘ্নে জল ছাড়া যায়— এমন বিভিন্ন বিষয় রাজ্য সরকারকে জানানো হবে।

Advertisement

গত বছর অগস্টে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যার কবলে পড়ে। সেই সময় ডিভিসি-র জলাধার থেকে জল ছাড়া হয়। নবান্নে বসে রাতভর বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পরেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ডিভিসি ব্যবসা করবে বাংলায়, হেডকোয়ার্টার বাংলায়, আর ডুবিয়ে দেবে আমাদের— এটা হতে পারে না। কেন্দ্রের কাছেও ডিভিসি-র ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ জানান মুখ্যমন্ত্রী।

যদিও পরে পাল্টা আসরে নেমে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জল ছাড়ার রীতিমতো হিসেব দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, পাঞ্চেত, মাইথন-সহ বিভিন্ন জলাধারগুলি থেকে কত জল ছাড়া হবে, তা নিয়ন্ত্রণ করে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। সেখানে কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সদস্য সচিব, ডিভিসি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) এবং ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গের সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়াররাও রয়েছেন। সেই কমিটির পরামর্শ মেনেই জল ছাড়ে ডিভিসি। বন্যা নিয়ন্ত্রণে সংস্থার ভূমিকার প্রশংসাও করেন অ্যান্ড্রু। এ দিনও তিনি বলেন, ‘‘জলাধার থেকে কত জল ছাড়া হবে তা ডিভিসি একা ঠিক করে না। উচ্চ পর্যায়ের কমিটির পরামর্শ মেনে জল ছাড়া হয়।’’ তাঁর দাবি, ডিভিসি-র প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমিকা রয়েছে।

Advertisement

তবে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, জলাধারগুলির জলধারণ ক্ষমতা আগের থেকে কমে যাওয়ায় কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেগুলির ক্ষমতা বাড়াতে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়াগত পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান ডিভিসির চেয়ারম্যান। সংস্থা সূত্রে খবর, দুর্গাপুর ব্যারাজেও বালি ও পলি জমে নাব্যতা কমে গিয়েছে। এর জেরে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়লে অনেক সময় বন্যা পরিস্থিতি জটিল হতে পারে, আশঙ্কা স্থানীয় প্রশাসনের একাংশের। এ ছাড়া অতিরিক্ত জল ছাড়া হলে তা যে সব নদী ও ক্যানাল দিয়ে বয়ে যাওয়ার কথা, সেগুলিও সংস্কারের অভাবে বেহাল বলে অভিযোগ। যদিও ডিভিসি চেয়ারম্যানের আশ্বাস, ‘‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে সব কিছু নিয়েই আলোচনা হবে। বন্যার শঙ্কা রয়েছে এমন এলাকাগুলিতে সতর্কীকরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement