শনিবার সকাল থেকে দ্বারকেশ্বর নদের খাতে ধু ধু করা বালির উপর দিয়ে বইতে থাকে কংসাবতীর জল। নিজস্ব চিত্র
এই শুকনো মরসুমে দ্বারকেশ্বরের জলপ্রবাহ বাড়াতে কংসাবতীর জলাধার থেকে সেচ খালের মাধ্যমে জল ফেলা হল সেই নদে। এর ফলে বাঁকুড়া পুরসভা এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ পরিষেবা অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার রাতে কংসাবতী জলাধার থেকে দ্বারকেশ্বর নদের দিকে জল ছাড়া হয়। বাঁকুড়া পুরসভার এক আধিকারিক জানান, বাঁকুড়া শহরের মানুষদের যাতে জলকষ্টে ভুগতে না হয়, তাই এই সিদ্ধান্ত।
এত দিন বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ৫টি পাম্পিং স্টেশন ও গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে গরম তীব্র মাত্রায় বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির কোনও লক্ষণও দেখা যায়নি। ফলে মার্চের শেষে শুকিয়ে যেতে শুরু করে দ্বারকেশ্বর নদের জল। বিপর্যয়ের আশঙ্কায় পুরসভার বিশেষজ্ঞরা সেচ দফতরে চিঠি পাঠান। পুরসভার অনুরোধ মেনে শহর থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে কংসাবতী নদীর মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে ডান দিকের প্রধান সেচ খাল মারফত জল ছাড়া শুরু করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেই জল এসে পৌঁছয় দ্বারকেশ্বর নদের নন্দীগ্রাম সংলগ্ন ঘাটে। শনিবার সকাল থেকে দ্বারকেশ্বর নদের খাতে ধু ধু করা বালির উপর দিয়ে বইতে থাকে কংসাবতীর জল।
বাঁকুড়া পুরসভার উপ পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজ বলেন, ‘‘এই এলাকার বাসিন্দাদের কখনও সে রকম জলসঙ্কটে ভুগতে হয়নি। তাপমাত্রার পারদ চড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বারকেশ্বরের জলও শুকিয়ে পড়েছিল। তাই আগাম ব্যবস্থা হিসাবে কংসাবতী থেকে জল নিয়ে এসে দ্বারকেশ্বর নদের খাতে ফেলা হয়েছে। এতে চলতি মরসুমে আর জলকষ্টের কোনও সম্ভাবনা থাকবে না।"
বাঁকুড়া পুরসভার এই সিদ্ধান্তকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, "বাঁকুড়ার জলের সমস্যা মেটানোর জন্য কেন্দ্র থেকে বহু জল প্রকল্প রয়েছে। এর পরেও পুরসভাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হল। এতেই বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্রের টাকা আত্মসাৎ করেছেন রাজ্যের সরকার ও শাসক দলের নেতারা"।