‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় মহম্মদ সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ ফরাক্কা হয়ে মুর্শিদাবাদে প্রবেশ করেছে। শমসেরগঞ্জের ধুলিয়ান হয়ে এগিয়ে চলেছে যাত্রা। সেখানেই পেয়ারাপুরে রাহুল-সহ ন্যায় যাত্রার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিনন্দন জানালেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ দলের রাজ্য কমিটির নেতারা। যাত্রায় পা মিলিয়ে মহম্মদ সেলিম জানালেন, লড়াই যখন ন্যায় এবং অন্যায়ের মধ্যে, তখন তাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং ন্যায়ের পক্ষেই রয়েছেন।
বাংলায় কোনও জোট না করে একাই লড়বেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দলীয় পতাকা নিয়ে কংগ্রেসের ন্যায় যাত্রায় শামিল হয়েছেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা। সেলিম জানিয়েছেন, জোটের কথা বলতে আসেননি তাঁরা। যেখানে স্পষ্ট ভাবেই দেশটা ন্যায় আর অন্যায়ের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে, সেখানে ন্যায়ের পক্ষে সমর্থন জানাতেই এসেছেন তাঁরা। জোটের আলোচনা হলে তা হবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট কিংবা কংগ্রেসের কার্যালয়েই, জানিয়েছেন তিনি।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক আরও জানিয়েছেন, ২০২৪ সাল গোটা দেশের জন্য সংগ্রামের সময়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা, সংসদীয় গণতন্ত্র যেখানে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে, সেখানে যুদ্ধক্ষেত্রে লাইনটা খুব স্পষ্ট হয়ে গেছে। সেখানে লাইনের এক পাশে রয়েছেন তাঁরা। অন্য পাশে রয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করা বিজেপি। সেলিমের মতে, ‘‘বার্তাটা খুব স্পষ্ট।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন, মমতা সিপিএমের ঘাড়ে বন্দুক রেখে কংগ্রেসকে গাল দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে তৃণমূলের উদ্দেশে বিদ্রুপের সুর স্পষ্ট তাঁর গলায়, ‘‘ট্রেনে তো সবাই ওঠে, কিন্তু কে কোথায় নামবে সে গ্যারান্টি আমরা দিতে পারি না। মমতা বলছেন, ‘গাড়ি রোকো, আমি নেমে যাব।’ আমরা বলছি ‘স্বাগত’। এমনকি, ২২ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সংহতি মিছিলকেও ‘সং’ বলে কটাক্ষ করেছেন সেলিম। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যখন বলছি ধর্মের সঙ্গে মন্দির যুক্ত করবেন না, মমতাদি তখন মন্দির-মসজিদ-গুরুদ্বার সব যুক্ত করলেন। কেউ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে চায়। আর কেউ বেকারির বিরুদ্ধে, কৃষকদের সমস্যা, তাঁদের আত্মহত্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়। লাইনটা তো পরিষ্কার।’’
আজ ১ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদে প্রবেশ করেছে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’। জেলায় কংগ্রেসের দিন দুয়েকের কর্মসূচি রয়েছে। ধুলিয়ানে বিড়ি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাহুল। এর আগে, উত্তরবঙ্গে বাম নেতৃত্বকে রাহুলের ন্যায় যাত্রায় পা মেলাতে দেখা গিয়েছিল। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মতো রাজ্য সিপিএম আগেই জানিয়েছিল অন্য জেলাতেও সিপিএম নেতৃত্বকে দেখা যাবে। এ বার মুর্শিদাবাদেও একই চিত্র দেখা গেল।