শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বেহালার পর্ণশ্রী থানায় এফআইআর করলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বেহালার বাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলেই মঙ্গলবার লিখিত ভাবে তিনি অভিযোগ করেছেন মেয়র।
গত বছরের নভেম্বরে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা রুজু করেছিলেন শোভনবাবু। আলিপুর দায়রা আদালতে সেই বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলাটি চলছে। সূত্রের খবর, স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করার পরেই বেহালার বাড়ি ছেড়ে গড়িয়াহাট এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে চলে যান মেয়র। সেই সময় থেকে ওই ফ্ল্যাটেই রয়েছেন তিনি।
বেহালার বাড়িতে না থাকলেও সেখানে মেয়রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রয়েছে। এমনকী, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নিত্যব্যবহার্য জামাকাপড়ও রয়েছে বেহালার ওই বাড়িতে। সেই সব জিনিসপত্র ফেরত পাওয়ার জন্য আগেও একাধিক বার আবেদন করেছিলেন তিনি। এমনকী, বেহালার বাড়িতে জিনিস আনার জন্য প্রতিনিধিও পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু একটি জিনিসও তিনি ফেরত পাননি বলে অভিযোগ। এ বার সেই সব জিনিস ফেরত পাওয়ার জন্যই থানায় অভিযোগ করলেন মেয়র। মঙ্গলবার বিধানসভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিষয়টি স্বীকার করেন দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি যে পরিবেশে আছি, যে অবস্থার মধ্যে আছি, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, আমার চরম শত্রুরও যেন না হয়!’’
তবে, এ দিনের অভিযোগের কথা শুনে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রত্নাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘দলের নির্দেশে আমি অনেক দিন ধরে চুপ করে ছিলাম। এ বার মুখ খুলব দলের নির্দেশেই।’’
আরও পড়ুন: বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে মামলা শোভনের
নারদ মামলায় শোভনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরে রত্নাদেবীর নাম খবরের শিরোনামে উঠে আসে। মেয়রের স্ত্রী হিসেবে তিনি ২০১৬-র জুনে নিউ মার্কেট থানায় নারদ স্টিং অপারেশনের মূল কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ করেছিলেন, শোভনের নাম কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন ম্যাথু। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ ম্যাথুর নামে তদন্ত শুরু করে।
আরও পড়ুন: এ বারও পঞ্চায়েতের ফয়সালা কি কোর্টে
নারদ কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই এবং ইডি ডেকে পাঠায় মেয়রকে। এই দুই তদন্তকারী সংস্থার কাছে গিয়েই মেয়র জানিয়েছিলেন, তাঁর আয়-ব্যায় সংক্রান্ত যাবতীয় হিসেবপত্তর দেখভাল করেন তাঁর স্ত্রী রত্না। এর পরে রত্নাকেও ডেকে পাঠানো হয়। এত কিছুর মধ্যেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের মামলা করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। রত্নাদেবীর বিরুদ্ধে পারিবারিক হিংসা এবং নিষ্ঠুরতার অভিযোগ আনেন তিনি।