মৌসম বেনজির নুর।— ফাইল চিত্র
নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী তথা রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ মৌসম বেনজির নুর। উড়িয়ে দিলেন ইস্তফার জল্পনা। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মৌসম অভিযোগ করলেন, দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে অহেতুক জলঘোলা করা হচ্ছে। দলীয় নেতৃত্ব এবং কর্মীদের ভুল বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এই ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
গত শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ঠিক সেই দিনই মালদহ জেলা তৃণমূলের ৮ জনের কোর কমিটির সকল সদস্যকে ডেকে পাঠান অভিষেক। কিন্তু সেই বৈঠকে মৌসম, সাবিত্রী মিত্র এবং মানব বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ৩ জন উপস্থিত ছিলেন না। জানা যায়, মৌসম জ্বরে আক্রান্ত। তাই তিনি বৈঠকে যোগ দেননি। কিন্তু এই ঘটনাকে ঘিরে মালদহের জোড়াফুল শিবিরে শুরু হয় গুঞ্জন। শনিবার অবশ্য সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন মৌসম। তাঁর দাবি, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জল্পনা চলছে যে আমি না কি মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। এই ভুয়ো খবর ইচ্ছাকৃত ভাবে ছড়ানো হচ্ছে। নেতৃত্বকে ভুল বার্তা দিতে এ সব করা হচ্ছে। তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কাজ করছি। তাঁর সহযোগিতা পাচ্ছি। জেলার নেতারাও সহযোগিতা করছেন।’’
কেন সে দিন বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মৌসম। তিনি বলছেন, ‘‘আমি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলাম। আমার করোনা টেস্টও করা হয়েছিল। তবে রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।’’ শুভেন্দু মালদহে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক থাকাকালীন তাঁর হাত ধরেই কংগ্রেস ছেড়ে জোড়াফুল শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন মৌসম। সাংবাদিক বৈঠকে সদ্য মন্ত্রিত্ব থেকে সরে যাওয়া শুভেন্দুর প্রসঙ্গও উঠেছে। মালদহের তৃণমূল সভানেত্রী বলছেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দলে এসেছি। আমি তাঁর সৈনিক। ওঁর সৈনিক হিসাবেই কাজ করব। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলাম।’’
আরও পড়ুন: তৃণমূল বিধায়ক খুনের মামলায় মুকুল রায়কে চার্জশিট সিআইডি-র
আরও পড়ুন: আসানসোলে বিজেপির কর্মসূচিতে গুলি, বোমা, আহত বেশ কয়েকজন
গত শুক্রবার অভিষেকের ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিতির পর থেকেই মৌসমকে নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে তখনই মুখ না খুলে এক সপ্তাহ পর নিজের অবস্থান জানালেন কেন? মৌসমের দাবি, ‘‘এর আগেও মুখ খুলেছিলাম। এখন বিষয়টি নিয়ে বেশি জলঘোলা হচ্ছে দেখে সাংবাদিক বৈঠক করলাম।’’ মৌসমের অভিযোগ, ‘‘বাইরের কোনও শক্তি এই ষড়যন্ত্র করছে। এর মধ্যে বিজেপি-রও কেউ থাকতে পারে।’’