ভাঙড় ও সন্ত্রাস নিয়ে গণ কনভেনশন। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ভাবে ভোট ‘লুট’ হয়েছে, মানুষ তার জবাব দেবে লোকসভায়। ‘ভাঙড় গণহত্যা বিরোধী গণ-কনভেনশনে’ এই দাবি উঠে এল। কলকাতার মৌলালি যুব কেন্দ্রে মঙ্গলবার কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক এবং আইএসএফ চেয়ারম্যান নওসাদ সিদ্দিকী, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শমীক লাহিড়ী, সিপিআইয়ের গৌতম রায়, সিপিআই(এম-এল) লিবারেশনের দিবাকর ভট্টাচার্য, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, নিহত প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাসের দিদি প্রমীলা বিশ্বাস প্রমুখ। প্রত্যেকেই বলেন, যে স্পর্ধিত গণ-প্রতিরোধ পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, সেই পথেই লড়াই জারি রেখে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারে বদল আনতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের অবশ্য পাল্টা দাবি, এ বার পঞ্চায়েতে ‘পরিকল্পিত হিংসা’ তৈরি করে শাসক পক্ষকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে।
অম্বিকেশের বক্তব্য, “এই দলের সরকার গণতন্ত্র, সংবিধান মেনে কাজ করবে, আশা করা বৃথা।” সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক বলেন, “অসভ্যের রাজত্ব শেষ করতে হবে। এই ২৩-এ ভীত নড়ে গিয়েছে, ’২৪ সালে দো’তলা ভাঙতে হবে, ২৬ সালে স্বৈরাচারের বাড়ি ধুলায় মিশিয়ে দিতে হবে!” পুলিশকে নিশানা করে তিনি বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়েছি। পুলিশ ছাড়া তৃণমূলের একা লড়ার ক্ষমতা ছিল না।’’ নওসাদের প্রশ্ন, “১২ বছর ক্ষমতায় আছে, এতগুলো সরকারি প্রকল্প চালাচ্ছে, তা-ও কেন এই লুট হল?” এর পরেই চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, “ভাঙড় হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পরে তো ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত করতে হয়েছে। এ বার ডায়মন্ড হারবারে হারাব। সব গুন্ডামি, মস্তানি বন্ধ করে দেব! তার পর কি ডায়মন্ড হারবারকে কলকাতা পুলিশের অন্তর্গত করবেন?”
কর্মসূচি শেষে এ দিন এক ব্যক্তির দিকে এগিয়ে যান নওসাদ। তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি নিজেকে পুলিশের লোক বলে দাবি করেন। যদিও তিনি পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। কর্তব্যরত কলকাতা পুলিশের কর্তারাও ওই ব্যক্তিকে চেনেন না বলে জানান। নওসাদ তখন ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারের দাবি জানান। নওসাদ সভাস্থল ছাড়া পর্যন্ত পুলিশ অবশ্য ওই ব্যক্তিকে আটক করে তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করছিল।
তৃণমূলের মুখপাত্র তাপস রায় অবশ্য বলেন, "আমাদের দল একটি ঘটনারও বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ধরনের পরিকল্পিত হিংসাকে বাস্তবায়িত করা হয়েছে, অতীতে তা দেখা যায়নি। তৃণমূল কংগ্রেসকে আটকাতে একটা সম্মিলিত ভাবে অশান্তি তৈরির প্রচেষ্টা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে শাসক হিসেবে আমাদের দিকে আঙুল তোলা অন্যায় হবে। আর সিপিএমের কাছ থেকে নির্বাচনী স্বচ্ছতা ইত্যাদি বিষয়ে এ রাজ্যের মানুষ কিছু শুনতে চান না!"