প্রতীকী ছবি।
মোবাইল চুরির অভিযোগ দায়ের করতে উত্তর বন্দর থানায় গিয়েছিলেন বড়বাজারের এক বাসিন্দা। কথাচ্ছলে পুলিশ অফিসারকে তিনি জানান, তাঁর গ্রামের বাড়ি বিহারের লখিসরাইয়ে। অফিসার তাঁকে জানান, ওই জায়গা তো মাওবাদী অধ্যুষিত। অফিসার হাসতে হাসতে অভিযোগকারীর কাছে জানতে চান, মাওবাদীদের সঙ্গে তাঁর কোন যোগাযোগ আছে কি না। অভিযোগকারী জানান, তিনি মাওবাদী নন। তবে এখন তিনি যেখানে বসবাস করছেন, সেখানে এক জন অভিযুক্ত মাওবাদী লুকিয়ে আছে।
লালবাজার জানায়, সেই সূত্রে ধরেই বুধবার চক্ররেলের বড়বাজার স্টেশনের কাছ থেকে বিহারের বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সুনীল কুমার। তার বাড়ি বিহারের লখিসরাইয়ের পিড়ি বাজার এলাকায়। তদন্তকারীদের দাবি, বিহার পুলিশের খাতায় পাঁচ মাস ধরে সে ‘ফেরার’। তার বিরুদ্ধে খুন, পুলিশ খুনের চেষ্টা, তোলাবাজি, অপহরণের অভিযোগ রয়েছে। তার নামে ইউএপিএ বা বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে বিহার পুলিশ।
১৮ জুলাই পিড়ি বাজারের কোড়া জঙ্গলে মাওবাদীদের সঙ্গে বিহার পুলিশের গুলির লড়াই হয়। জখম হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী। সেই সংঘর্ষের পরে সুনীল কলকাতায় পালিয়ে আসে। ২০ জুলাই সে স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডের শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেয়। নাম লুকিয়ে পরিবহণ সংস্থায় মালবাহকের কাজ করছিল সুনীল।
লখিসরাইয়ের পিড়ি বাজার এলাকার অন্য এক বাসিন্দা সুনীলকে ওই সংস্থায় কাজ করতে দেখেছিলেন। তিনিই মোবাইল চুরির অভিযোগ জানাতে থানায় যান। সেখানে পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথায় কথায় সুনীলের কথা বলেন। তার পরেই পুলিশ সুনীলকে আটক করে উত্তর বন্দর থানার নিয়ে যায়। সেই সময় ওই যুবক জানায়, তার নাম অনিল। বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সুনীলের সবিস্তার তথ্য জানায় তদন্তকারীদের। বৃহস্পতিবার বিহার পুলিশের একটি দল কলকাতায় এসেছে। ট্রানজিট রিমান্ডে সুনীলকে নিয়ে বিহারে রওনা দেবে তারা।