প্রতীকী ছবি
কেউ অবসর নিয়েছেন তিন মাস আগে। কেউ নিয়েছেন তারও আগে। কিন্তু অভিযোগ, অবসর নেওয়ার পরেও এখনও তাঁদের পেনশন-সহ অন্যান্য প্রাপ্য মিলছে না। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে অবসরপ্রাপ্ত বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছে, জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং সল্টলেকের পেনশন অফিসে গিয়ে বারবার খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু কবে থেকে পেনশন চালু হবে সে বিষয়ে তাঁরা সদুত্তর পাননি।
এমনই এক জন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পাথরপ্রতিমার এক শিক্ষিকা। গত ২১ নভেম্বর স্কুলের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। মার্চ মাসেও তাঁর পেনশন চালু হয়নি। অন্যান্য অবসরকালীন সুযোগসুবিধাও মেলেনি। একই অভিজ্ঞতা বীরভূমের রামপুরহাটের এক শিক্ষকেরও। তিনি জানান, ২১ ডিসেম্বর অবসর নিয়েছেন। কিন্তু এখনও পেনশন পাচ্ছেন না। অথচ অবসর গ্রহণের পরেই পেনশন এবং অন্যান্য প্রাপ্য পাওয়ার কথা।
রাজ্যের পেনশন দফতর সূত্রের দাবি, ওই সব সদ্য অবসরপ্রাপ্তদের একাংশের পেনশনের কাগজপত্র এখনও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস থেকে সল্টলেকের পেনশন অফিসে এসে পৌঁছয়নি। কয়েক জনের নথি সবেমাত্র এসে পৌঁছেছে। সেই নথি যথাযথ ভাবে যাচাই করার পরেই পেনশন চালু করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পেনশন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকার অবসর গ্রহণের তিন মাস আগে তাঁর চাকরি সংক্রান্ত নথিপত্র পেনশন অফিসে এসে পৌঁছনোর কথা। সময় মতো কাগজ পৌঁছলে অবসরগ্রহণের পরেই পেনশন চালু হয়ে যায়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে অতিমারি পরিস্থিতিতে জেলার অফিসগুলিতে কর্মী কম থাকায় বা অন্যান্য কারণে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নথি সময় মতো এসে পৌঁছয়নি। তার ফলেই অনেকের পেনশন শুরু হতে দেরি হচ্ছে।’’ ওই কর্তার দাবি, ‘‘নথিপত্র দেখে পেনশন ছাড়ার প্রক্রিয়া কিন্তু বন্ধ নেই। প্রতি মাসে ২১০০ থেকে ২৫০০ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর পেনশনের কাগজ ছাড়া হচ্ছে। মার্চ মাসেও ২৫০ থেকে ৩০০ জনের মতো পেনশনের কাগজ ছাড়া হয়েছে। পেনশন দফতরে কাজ থেমে নেই। ’’
যদিও পেনশন অফিসের দাবি খারিজ করছেন রামপুরহাটের ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাঁর দাবি, ‘‘আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, আমার নথিপত্র সল্টলেকের পেনশনের অফিসে মাস দুয়েক ধরে পড়ে রয়েছে। নথিপত্র সময় মতো পৌঁছলেও আমি এখনও পেনশন পাচ্ছি না।’’
পেনশনের বিভ্রাট নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা শিক্ষক নেতা নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘অতিমারির কারণে এবং জেলা শিক্ষা দফতরের দীর্ঘসূত্রিতায় পেনশন দীর্ঘ দিন আটকে আছে, এই অজুহাত দিলে চলবে না।। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পেনশন মানবিক কারণেই দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।’’