প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে বেসরকারি বেশ কিছু স্কুল আর্থিক ভাবে সঙ্কটে পড়েছে। ওই সব স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনও অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে বলে খবর। এমনকি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপাতত চাকরি নেই বলেও জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, স্কুল খুললে ফের তাঁদের চাকরিতে নেওয়া হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন, তাঁরা নির্দিষ্ট বেতনের পরিবর্তে ক্লাসপ্রতি টাকা পাচ্ছেন।
বহু বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন নির্ভর করে ফি-র উপর। পরপর তিন মাস অভিভাবকদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই স্কুল ফি জমা দিয়েছেন। ফলে মাঝারি এবং ছোট স্কুলগুলিতে শিক্ষকদের বেতন দেওয়াও অসুবিধা হচ্ছে। আইসিএসই বোর্ডের স্কুলগুলির সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি সুজয় বিশ্বাস শনিবার বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে বর্ধিত ফি বন্ধ রেখেছি।’’ প্রসঙ্গত, সরকার অভিভাবকদের স্কুল ফি দিতে অসুবিধা হলে তা নিয়ে স্কুলগুলিতে চাপ দিতেও নিষেধ করে।
একটি বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ জানান, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন অর্ধেক করে দেওয়া ছাড়া তাঁদের কাছে আর কোনও পথ খোলা নেই। মডার্ন হাই স্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর এ দিন জানান, এপ্রিলে যে ফি জমা নেওয়ার কথা ছিল তার সময়সীমা ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ৫০% ফি জমা পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই ফি-র উপর নির্ভর করেই স্কুলের সব কিছু চলে। ফি সব জমা না পড়লে স্কুল অসুবিধার মধ্যে পড়বে।’’ একটি বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ জানান, লকডাউন উঠে গেলে তাদের গোটা স্কুলকে স্যানিটাইজ় করতে হবে। একাধিক থার্মাল গানের প্রয়োজন। কিন্তু খরচ বাড়লেও ফি জমা পড়ছে তুলনামূলক খুবই কম। তিনি বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা স্কুলের ফি না-দিলে স্কুলগুলি বিপদে পড়বে।’’
আরও পড়ুন: লকডাউনে বাড়তি ফি কেন, বিক্ষোভ স্কুলে স্কুলে
বরাহনগরের সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের অধ্যক্ষ নবারুণ দে বলেন, ‘‘ছোট, মাঝারি নয়, বড় বড় স্কুলও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাটছে।’’ বেসরকারি স্কুলগুলির অভিভাবকদের সংগঠন ইউনাইটেড গার্জিয়ানস ফোরামের সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। তাঁদের বেতন যেন কখনই কমানো না হয় বা কাটা না হয়। কিন্তু স্কুলগুলি এই লকডাউনের সময় বাস ফি-সহ এমন কিছু ফি নিচ্ছে, যার প্রয়োজন নেই।’’