সঙ্কটে বিবাহ নিবন্ধকেরা। প্রতীকী ছবি।
একটি থানা এলাকায় বছরে ক’টা আর বিয়ে হয়! সেই অত্যল্প বিয়ে বাবদ সামান্য কয়েকটা টাকায় কি সংসার চলে? এই প্রশ্ন রাজ্যের অধীনে থাকা ‘ম্যারেজ রেজিস্ট্রার’ বা বিবাহ নিবন্ধকদের। এত দিন চলত, কেননা তাঁদের কারও কাজের সীমানা ছিল চারটি থানা, কারও একটি মহকুমা, কারও বা আস্ত একটি জেলা। কিন্তু সেই সীমানা কমিয়ে এ বার তাঁদের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র একটি থানা এলাকা। নভেম্বরে এই মর্মে রাজ্য সরকারের আইন দফতরের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তি ঘিরে চরম আতান্তরে পড়েছেন রাজ্যের দুই সহস্রাধিক বিবাহ নিবন্ধক। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করতে বিবাহ নিবন্ধকদের সংগঠন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং দফতরের আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপি দিলেও অদ্যাবধি কোনও কাজ হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।
কুমোরটুলির বাসিন্দা এক বিবাহ নিবন্ধকের প্রশ্ন, একটি থানা এলাকায় বছরে কত বিয়ে হয়? তা ছাড়া একটি থানার অধীনে কমপক্ষে সাত জন নিবন্ধককে নিয়োগ করা হচ্ছে। ফলে কাজের সুযোগ আরও কমে যাচ্ছে। নয়া সরকারি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে কেবল বিবাহ নিবন্ধক নয়, সাধারণ মানুষও বিপাকে পড়ছেন। কারণ, এত দিন যে-নিবন্ধক চারটি থানায় কাজ করতেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় তিনি পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। নতুন নিয়মের ফলে যে-কেউ অন্য থানার বাসিন্দাদের বিয়ের নথিভুক্তির কাজ করতে পারছেন না।
সল্টলেকের বাসিন্দা এক ম্যারেজ অফিসারের অভিযোগ, ‘‘আমাদের রুটিরুজিতে বড় রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ হাওড়ার মালিপাঁচঘরার রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় চারটি থানায় কাজ করতেন। এ বার তাঁকে কাজ করতে হবে শুধু গোলাবাড়ি থানা এলাকায়। রঞ্জনের আক্ষেপ, ‘‘মালিপাঁচঘরা থানায় আমার অফিস ছিল। এখন নতুন অফিস করতে হবে। এত টাকা কোথায় পাব?’’ উত্তর ২৪ পরগনার এক নিবন্ধক জানাচ্ছেন, বিয়ে-পিছু তাঁরা পান মাত্র ৩৭৫ টাকা (৫০০ টাকার মধ্যে সরকার ১২৫ টাকা কর বাবদ কেটে নেয়)। নতুন নিয়মের ফলে অনাহারে দিন কাটাতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে আইনমন্ত্রীকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস বা হোয়াটসঅ্যাপেরও উত্তর মেলেনি।