ছবি সংগৃহীত।
পরীক্ষা হবে কিনা, সেই বিতর্কের মাঝেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট), বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করে ফাইনাল সিমেস্টারের ফল প্রকাশ করে ফেলেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও অধিকাংশ বিষয়ের ফল প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই মূল্যায়ন করা হয়েছে। আগের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে কাউকে পাশ করানো হয়নি।
রাজ্যের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিভিন্ন পেশাগত কোর্সের ফাইনাল সিমেস্টারের ফল ২০ জুলাই প্রকাশ করে ম্যাকাউট। পরীক্ষা নিয়ামক শুভাশিস দত্ত জানিয়েছিলেন, ইউজিসি এবং উচ্চশিক্ষা দফতরের অ্যাডভাইজ়রি মেনেই ফল প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষার মাধ্যমেই পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ৩১ জুলাই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত সিমেস্টারের ফল প্রকাশ করে। উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া ইউজিসির দ্বিতীয় নির্দেশ আসার পরে জানিয়েছিলেন যে ইউজিসি নির্দেশিকার সঙ্গে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল্যায়নের তার দ্বন্দ্ব নেই। প্রেসিডেন্সিতে ৫০% নম্বর দেওয়া হয়েছে কন্টিনিউয়াস অ্যাসেসমেন্ট এর মাধ্যমে। বাকি ৫০% নাম্বার দেওয়া হয়েছে ওপেন চয়েস অ্যাসাইনমেন্ট অর্থাৎ কোনও ক্ষেত্রে প্রজেক্ট, কোনও কোনও ক্ষেত্রে হোম অ্যাসাইনমেন্ট এর মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: ছাত্র-সভায় ধুন্ধুমার, দিল্লিকে রিপোর্ট কংগ্রেসের
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ কলা এবং বিজ্ঞান বিভাগের প্রায় সব বিষয়ের ফল প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। এ দিন সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় জেনেছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’’
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, ২০% নম্বর তাঁরা হোম অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমেই দিয়েছেন। বাকিটা আগের সিমেস্টারের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ‘‘আগের সিমেস্টারের ফলের ভিত্তিতে যে ৮০% নম্বর দেওয়া হয়েছে তা নতুন করে কোনও প্রজেক্ট পড়ুয়াদের ই-মেলের মাধ্যমে করতে দিয়ে তার ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া যায় কিনা দেখা যেতে পারে।’’ রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালিকে ফোন এবং মেসেজ করে কথা বলা যায়নি।
আরও পড়ুন: জেইই-তে নেই বাংলা, প্রতিবাদ বাম-কংগ্রেসের
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরীক্ষা সংক্রান্ত যে পরামর্শ-নির্দেশিকা রাজ্য পাঠিয়েছিল, সেখানে করোনার এই পরিস্থিতিতে কোনও রকম পরীক্ষা না-নেওয়ার উল্লেখ ছিল। পাশাপাশি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৮০% নিতে হবে আগের সিমেস্টারগুলির মধ্যে সব থেকে ভাল ফল যেটির, তার থেকে। ২০% শতাংশ অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন থেকে। ২৯ এপ্রিল ইউজিসি-র পাঠানো গাইডলাইন অনুসরণ করেই রাজ্য নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ৬ জুলাই ইউজিসি-র নয়া নির্দেশিকায় বলে, চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা বাধ্যতামূলক ভাবে নিতেই হবে। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। উপাচার্যরাও ইউজিসিকে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব মণীশ জৈন কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা সচিব অমিত খারেকে পরিস্থিতি জানান এবং শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে কেন্দ্র একতরফা সিদ্ধান্ত নিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিন্তু কেন্দ্র তাতে আমল দেয়নি। শুধু রাজ্যের প্রতিষ্ঠান নয়, রাজ্যে অবস্থিত কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির ফাইনাল সিমেস্টারের ফলও প্রকাশিত হয়েছে।
খড়গপুর আইআইটি, এনআইটি দুর্গাপুর মিড টার্ম পরীক্ষা, অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন, ক্লাস টেস্ট এবং কিছুটা অনলাইন পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশ করেছে। শিবপুর আইআইইএসটি পরীক্ষার ফল আগের সিমেস্টারের সব থেকে ভাল ফল, মিড টার্ম এর ফল এবং শিক্ষকদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করেছে।