বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র ।
সন্দেশখালিকাণ্ডে ধৃত শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে রাজ্যের পুলিশ। শাহজাহানকে ১০ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু এর ফলে রেশন দুর্নীতি মামলার যে তদন্ত ইডি করছে তার অনেক তথ্য এবং নথি ‘নষ্ট’ হতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদীর মন্তব্য, রাজ্য পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন ধৃত। এর ফলে ইডি যে মামলার তদন্ত করছে, তার অনেক তথ্যপ্রমাণ ‘নষ্ট’ করে দেওয়া হতে পারে।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল ইডি। সেই আক্রমণের প্রেক্ষিতে তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। যা নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের বেঞ্চ ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণের ঘটনায় সিবিআই এবং রাজ্য পুলিশকে যৌথ ভাবে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল। যাকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় ইডি এবং রাজ্য পুলিশ। সেখানে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা আগামী ৬ মার্চ। কিন্তু বৃহস্পতিবার ইডির আইনজীবী ধীরজের আবেদন, সেই সিট গঠন মামলার দ্রুত শুনানি করা হোক। সম্ভব হলে শুক্রবারই সেই মামলার শুনানি হোক। ইডির দাবি শুনে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি বিবেচনা করা দেখা হবে।
বৃহস্পতিবার মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার হন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। মিনাখাঁ থেকে শাহজাহানকে গ্রেফতার করার পর তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। প্রথমে আদালতের লকআপে রাখা হয় সন্দেশখালির ‘বাঘ’ (এলাকায় এই নামেই পরিচিত তিনি)-কে। এর পর শাহজাহানকে আদালতে পেশ করে তাঁকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন করে পুলিশ। যদিও আদালত শাহজাহানকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। বৃহস্পতিবার পুলিশ আদালতে জমা দেওয়া নথিতে শাহজাহানকে ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করেছে। তাঁকে জামিন দিলে সন্দেশখালি এবং ন্যাজাট থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশ। নথিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। এর পর শাহজাহানকে কলকাতার ভবানী ভবনে রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে আসে পুলিশবাহিনী। সূত্রের খবর, শাহজাহান মামলায় এখন থেকে তদন্ত করবে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি।