Education

ভর্তিতে আর্থিক বোঝা কমাচ্ছে বহু কলেজ

রাজ্যের কলেজগুলিতে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ১০ অগস্ট। ভর্তির পরেও অতিমারির দাপটে পড়ুয়ারা কতটা ক্লাস করতে পারবেন, সেই বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৭:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোনও কোনও কলেজ ভর্তির ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ কম টাকা নিচ্ছে। কেউ কেউ কমাচ্ছে ভর্তির ফর্মের দাম। অনেকে আবার সাময়িক ভাবে মকুব করে দিচ্ছে হস্টেলের খরচ। করোনা-কালে এ ভাবেই ভর্তিতে ছাত্রছাত্রীদের কিছুটা আর্থিক ছাড়ের ব্যবস্থা করছে অনেক কলেজ।

Advertisement

রাজ্যের কলেজগুলিতে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ১০ অগস্ট। ভর্তির পরেও অতিমারির দাপটে পড়ুয়ারা কতটা ক্লাস করতে পারবেন, সেই বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। কলেজ কবে খোলা যাবে, বলতে পারছেন না কেউই। ভর্তি হয়েও হয়তো অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যেতে হবে পড়ুয়াদের। এই অবস্থায় ভর্তির সময় তাঁদের কাছ থেকে ফি কিছু কম নিয়ে আর্থিক সুরাহার বন্দোবস্ত করতে চাইছেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। বাগবাজার উইমেন্স কলেজের মতো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ওই কলেজের অধ্যক্ষা মহুয়া দাস বৃহস্পতিবার জানান, পড়ুয়ারা বর্তমান পরিস্থিতিতে ভর্তির সময় যাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পান, সেই জন্য কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর— দুই স্তরেই ভর্তির ফি কমানো হয়েছে। ‘‘স্নাতক স্তরে সাধারণ বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ এবং ল্যাবরেটরি আছে, এমন বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে ২৫ শতাংশ,’’ বলেন মহুয়াদেবী। লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার জানান, ভর্তির ফর্মের জন্য যে-টাকা লাগে, তা কমানো হচ্ছে। দূরের ছাত্রীরা ওই কলেজে ভর্তির পরে ক্লাস করার জন্য যত দিন হস্টেলে থাকবেন, তত দিন তাঁদের হস্টেল ফি দিতে হবে না।

শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তরফে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, পড়ুয়াদের সেশন চার্জ কিছুটা কমানো হোক। এবং টিউশন ফি যেন এখনই নেওয়া না-হয়। ‘কশন মানি’ ভর্তির সময় না-নিয়ে যে-কোনও সিমেস্টারে নেওয়া যেতে পারে। মৌলানা আজাদ কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস দত্ত জানান, সরকারি প্রতিষ্ঠান বলেই তাঁদের আয়-ব্যয়ের কিছুটা হিসেব সরকারকে দিতে হয়। অবশিষ্ট ক্ষেত্রে তাঁরা নিজেদের মতো চলতে পারেন। সেই অংশের আওতায় ফি কতটা কমানো যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। বেহালা বিবেকানন্দ উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য জানান, ভর্তির সময় তাঁরা বিদ্যুৎ ও ল্যাবরেটরি চার্জ নেবেন না। কারণ, এখন কলেজে ক্লাস হচ্ছে না। ক্লাস শুরু হওয়ার পরে এগুলো নেওয়া হবে। অতিথি শিক্ষকদের বেতন বাবদ যে-অর্থ পড়ুয়াদের কাছ থেকে নেওয়া হত, তা-ও নেওয়া হবে না। কারণ অতিথি শিক্ষক-শিক্ষিকারা এখন ‘স্টেট এডেড কলেজ টিচার’ হয়ে গিয়েছেন। আর কলেজ নয়, এ বার তাঁদের বেতন দেবে সরকারই।

Advertisement

বেলঘরিয়া ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জিত দাস জানান, ভর্তির ফর্মের দাম কমিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। তা ছাড়া ভর্তির সময়েই দু’টি সিমেস্টারের জন্য যে-টাকা (৫৮০০) নেওয়া হয়, তার থেকে ২৫% শতাংশ কম নেওয়া হচ্ছে। কমিয়ে দেওয়া ওই ফি পড়ুয়ারা দু’বারে দিতে পারবেন। ল্যাবরেটরি ফি, সাইকেল স্ট্যান্ড ফি-র মতো কিছু টাকা নেওয়া হবে না।

অনেক অধ্যক্ষের বক্তব্য, এখন যদি ফি কমিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে ভবিষ্যতে স্বাভাবিক ক্লাস শুরু হওয়ার পরে পড়ুয়াদের হয়তো স্বাভাবিক নিয়মে ফি মেটাতে অনীহা দেখা দিতে পারে। তবে অতিমারির এই আবহে পড়ুয়াদের যে স্বস্তি দেওয়া দরকার, সেই বিষয়ে সকলেই একমত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement