অলিউর রহমান। নিজস্ব চিত্র।
একবার বিয়ে করে সাধ মেটেনি। নতুন নতুন বিয়ের সাধ মাঝে মধ্যেই চাগাড় দিয়ে ওঠে তাঁর।
সাধ মেটাতে চার চারবার বিয়ে সেরে ফেলেছেন বছর পঁয়তাল্লিশের অলিউর রহমান। বাড়িতে প্রথম পক্ষের স্ত্রী আছেন। দুই এবং তিন নম্বর পরিবার অবশ্য ছেড়ে গিয়েছেন অলিউরকে। সেই ‘শোক’ সামলাতেই চতুর্থবার বিয়ে করে ফেলেন তিনি।
তবে নববধূর বরণ ততটা মধুর হল না। নতুন বৌ নিয়ে ঘরে ঢুকতে গিয়ে প্রথম পক্ষের দুই ছেলের হাতে মার খেয়েছেন অলিউর। প্রথম পক্ষের স্ত্রী-ও ঝাঁটাপেটা করেছেন হাতখুলে। নতুন বৌকেও পেটানো হয়েছে ভাল মতো। অভিযোগ, তিনিও নাকি দা হাতে স্বামীকে রক্ষা করতে নেমেছিলেন সম্মুখ সমরে!
রবিবার সন্ধ্যায় বসিরহাটের মাটিয়া থানার স্বরূপনগর বাজার এলাকার ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অলিউর প্রায় কুড়ি বছর আগে বিয়ে করেছিলেন বেগমপুরের তাজমিরাকে। তাঁদের দুই ছেলে। পরে অলিউর আরও দু’টি বিয়ে করেন। এ নিয়ে তাজমিরার সঙ্গে আলিউরের অশান্তিও কম হয়নি। তবে ভিড় কমে দ্বিতীয়-তৃতীয়জন ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ায়।
কিন্তু মনে দাগাটা থেকে গিয়েছিল অলিউরের। তাজমিরার দাবি, দিন কয়েক আগে তিনি ছেলেদের নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে শনিবার রাতে আলিউর ফের বিয়ে সেরে ফেলেন। রবিবার সস্ত্রীক বাড়ি ফেরেন।
খবর পেয়ে তাজমিরা তাঁর দুই ছেলে ও ভাইকে নিয়ে ফিরে আসেন। অলিউরের বাবা-মা, ভাই অবশ্য অলিউরেরই পক্ষ নেন। তাঁরা তাজমিরা ও তাঁর ছেলেদের আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। জমি ছাড়তে রাজি ছিলেন না নতুন বৌও। জানা যাচ্ছে, তিনিও নাকি স্বামীর ভিটেয় অধিকার ফলাতে শুরু করেন প্রথমদিন থেকেই। কোমরে নতুন পাটভাঙা শাড়ির আঁচল জড়িয়ে দা হাতে মারপিটে নেমে পড়েন তিনি। অভিযোগ, সেই দায়ের কোপে জখম হন তাজমিরার ভাই।
দলে ভারী তাজমিরারা অলিউর আর তাঁর নতুন বৌকে গাছে বেঁধে মারধর করে বলে অভিযোগ।
খবর যায় থানায়। স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বিয়ে এবং মারধরের অভিযোগে পুলিশ অলিউর, তাঁর চতুর্থপক্ষের স্ত্রী, বাবা, মা ও ভাইকে গ্রেফতার করেছে।
অলিউর অবশ্য একের পর এক বিয়ে নিয়ে খোলামেলা কথাই বলছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিয়ে করতে ইচ্ছা হয়েছে বলেই করেছি। এর জন্য প্রথম স্ত্রীর মতামত নিতে হবে, এমন কথা তো কেউ বলেনি!’’
এত কিছুর পরে তাজমিরা এখনও স্বামীর ‘মঙ্গলই’ চাইছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম, স্বামীর ঘাড়ে বিয়ের ভূত চেপেছে। তাই ঝাঁটাপেটা করে ভূত তাড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম।’’