প্রতীকী ছবি।
পোস্তপ্রেমী বাঙালির পাতে পোস্তের জোগান স্বাভাবিক রাখতে নিজের রাজ্যে তা চাষ করার অনুমতি চাইলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাবতীয় রাজনৈতিক জল্পনা ছাপিয়ে গিয়ে শুক্রবার ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজের আসরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে মমতার পোস্ত-চর্চা বাড়তি গুরুত্ব পেল।
ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির (ইস্টার্ন জ়োনাল কাউন্সিল) বৈঠক হয় এ দিন। তার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে নিজের বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নবীন। প্রথমে স্থির ছিল, বেলা ১১টা থেকে বৈঠক চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত। তার পরে মধ্যাহ্নভোজ করে ফের ২টো নাগাদ শুরু হবে বৈঠকের দ্বিতীয় পর্যায়। কিন্তু তার পরিবর্তে বেলা ২টো পর্যন্ত একটানা বৈঠক হয়। তার পরে নবীনের বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন চার নেতানেত্রী। ফলে সেই মধ্যাহ্নভোজের রাজনৈতিক তাৎপর্য ঘিরে জল্পনা চরমে ওঠে।
বেলা আড়াইটে থেকে ভোজ চলে সওয়া ৩টে পর্যন্ত। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মমতা সেই ভোজসভায় শুধু একটু রায়তা খান। তারই ফাঁকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি জানান, কয়েকটি রাজ্যে পোস্ত চাষের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সেই অনুমতি পায়নি। অথচ আলুপোস্ত বা পোস্তবড়ার প্রতি বাঙালির প্রেম সুবিদিত। তাই কেন্দ্র অনুমতি দিলে প্রশাসনিক সুরক্ষাকবচে নিজেরাই পোস্ত চাষ করতে চায় পশ্চিমবঙ্গ।
বস্তুত, বাজারে মেলা পোস্তের অনেকটাই আসে অন্য দেশ থেকে। অন্য কয়েকটি রাজ্য থেকেও পোস্ত আসে। তাই পোস্তের দাম সব সময়েই বেশ চড়া থাকে। নবান্নের মতে, এ রাজ্যে পোস্ত চাষ করা গেলে তার দাম মানুষের নাগালের মধ্যে থাকবে। কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত রাজ্যের আর্জিতে সাড়া দেবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।
পর্যবেক্ষক মহলের অনুমান ছিল, ওই মধ্যাহ্নভোজের ফাঁকে শাহের সঙ্গে মমতার রাজনৈতিক আলাপচারিতা হবে। তা ছাড়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-পরবর্তী পরিস্থিতিতে মমতার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক অবস্থান মধ্যাহ্নভোজে উপস্থিত বাকি মুখ্যমন্ত্রীদের থেকে ভিন্ন। ফলে দুই ভিন্ন ‘মেরু’র মেলবন্ধন হয় কি না, তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছিল পর্যবেক্ষক শিবিরে। যদিও মধ্যাহ্নভোজের পরে মমতা স্পষ্ট করে বলেন, ‘‘আমি তো মধ্যাহ্নভোজ করি না। মুখ্যমন্ত্রীদের এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে নবীনজির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েই আমি এসেছি। একটু রায়তা খেয়েছি। ওড়িশা এবং আমাদের একই রকমের খাবার। আলাদা করে (কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে) কথা হয়নি, আমরা চার জন একসঙ্গেই ছিলাম।’’