ইন্ডিগোর পাইলটের সঙ্গে সে দিন কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) অফিসারের ঠিক কী কথা হয়েছিল, জানতে চায় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। ব্যারাকপুর আদালত সেই কথোপকথনের টেপ পুলিশকে দিতে নির্দেশ দিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে।
৩০ নভেম্বর। পটনা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দিন কলকাতায় ফিরছিলেন সপার্ষদ। বিমানটি কলকাতার মাথায় এসে চক্কর কাটতে শুরু করে। দেরি করে বিমানবন্দরে নামে। দেখা যায়, বিমানবন্দরে প্রস্তুত রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকল।
অভিযোগ উঠেছিল, বিমানটিকে ইচ্ছা করেই দেরিতে নামানো হয়। যদিও ওই বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে এসেছিল এবং তা যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারত। এর পিছনে মুখ্যমন্ত্রীকে হত্যার চক্রান্ত করা ছিল কি না, সে প্রশ্নও ওঠে। তদন্তে নামে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। সমান্তরাল ভাবে বিমানবন্দর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে বিধাননগরের পুলিশও ঘটনাটির তদন্ত শুরু করে।
ডিজিসিএ তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলেও পুলিশি তদন্ত এখনও চলছে। পুলিশের মতে, চক্রান্ত করেই ওই বিমান নামতে দেরি করানো হয়েছিল না কি সত্যিই সমস্যা হচ্ছিল, তা পাইলট এবং এটিসির কথোপকথন থেকেই স্পষ্ট হবে। ওই কথোপকথনের টেপ এখন ডিজিসিএ-র সম্পত্তি। তা হাতে পায়নি পুলিশ। তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। শুক্রবার ব্যারাকপুর আদালত ওই টেপ পুলিশকে দেওয়ার জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। সরকার পক্ষের আইনজীবী পল্লব চৌধুরী বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’
ডিজিসিএ কি টেপ দেবে? দিল্লি থেকে এ দিন ডিজিসিএ-র এক কর্তা জানান, পাইলটের সঙ্গে এটিসি-র কথোপকথনের টেপ বাইরে প্রকাশ করা আইনবিরুদ্ধ। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও বিচারপতিকে দিয়ে কোর্ট অব ইনকোয়ারি হলে ওই টেপ দেওয়া যেতে পারে। ফৌজদারি মামলার জন্য পুলিশ চাইলে আমরা তা দিতে বাধ্য নই।’’ ডিজিসিএ তার নিজস্ব তদন্তে তিন জন পাইলট এবং এক এটিসি অফিসারকে সাময়িক ভাবে ডিউটি থেকে সরিয়েছিল। তাতে ইন্ডিগোর পটনা-কলকাতা রুটের ওই পাইলটও ছিলেন। সেই মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে এবং পাইলটরা বিমান ওড়াতে শুরু করেছেন। এটিসি অফিসারও তাঁর ডিউটিতে ফিরেছেন। তদন্ত রিপোর্ট বিমান মন্ত্রকের কাছে জমা পড়েছে এবং তাতে জানানো হয়েছে, ইন্ডিগো বিমানের কাছে পর্যাপ্ত জ্বালানি ছিল। ফলে জ্বালানি ফুরিয়ে দুর্ঘটনার উপক্রম হওয়ার যে অভিযোগ উঠেছিল, তা খারিজ হয়ে যাচ্ছে।