সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি-র আমলে আমলারা অসহায়। তাঁদের সম্পর্কে আমার উচ্চধারণা আছে। যা বলা হবে তা তাঁরা করতে বাধ্য নন। অনেক হয়েছে। আমি আমলাদের পাশে রয়েছি। এটা আমলাদের অপমান। ওঁরা খালি ভাষণ দিচ্ছেন। আর আমলারা রেশন সরবরাহ করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘আলাপনকে শো-কজ করা হয়েছে কি না সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই। কোনও চিঠি আসেনি। তবে যিনি ইতিমধ্যেই অবসর নিয়েছেন তাঁর ক্ষেত্রে এগুলো আর কার্যকর হয় না।’’
‘‘দেশের সবক’টি রাজ্যের এককাট্টা হয়ে এর বিরুদ্ধে সরব হওয়া উচিত। বিরোধী দলগুলির মুখ্যমন্ত্রীদেরও একজোট হওয়া উচিত। বিজেপি সরকার, কোভিড, অর্থনীতি—সব সামলাতেই ব্যর্থ। বিজেপি স্বৈরাচারীর মতো ব্যবহার করছে। ওরা হিটলার, স্ট্যালিনের মতো ব্যবহার করছে’’, বললেন মমতা
বাংলা হারতে জানে না। প্রধানমন্ত্রী এখনও আমার চিঠির উত্তর দিতে পারেননি। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আজ অবসর নিয়েছেন। আমলাতন্ত্রকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। এটা হওয়া উচিত নয়। এই জন্য সংবিধানে লক্ষ্মণরেখা টানা আছে। আলোচনা ছাড়া এটা সম্ভব নয়। সুপ্রিম কোর্টেরও নির্দেশ আছে: মমতা
মমতা বললেন, ‘‘আলাপন অবসর নিলেন। তাঁর আজই অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার ৩ মাসের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধি করেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিয়েছে। কেন্দ্র তাঁকে ডাকার কারণ দেখায়নি। একদিন ওদের পস্তাতে হবে।’’
রাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। পরবর্তী মুখ্যসচিব হচ্ছেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, জানালেন মমতা।
এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমি এটা কখনই মানব না। আমাদের আলাপনকে চাই। তিনি অবসর নিচ্ছিলেন। আমরা তাঁকে রাজ্যের প্রয়োজনে রেখেছি।
কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা এবং সম্মতি ছাড়া এটা করতে পারে না, বললেন মমতা। তাঁর প্রশ্ন, এটা কি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দেওয়া নয়? আমলারা কি চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক? এ ভাবে কি রাজ্য এবং কেন্দ্র লড়াই করবে? আমি সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এটা শুধু আলাপনের লড়াই নয়। এটা আইএএস, আইপিএস, বুদ্ধিজীবী, সাধারণ মানুষ সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
মমতার অভিযোগ, ‘‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। বিজেপি হেরেছে। এই জন্য ওঁরা এ সব করছেন। ওঁরা ভোট পরবর্তী হিংসা বলে চিৎকার করছেন। ওরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। আমরা তো কোনও ভোট পরবর্তী হিংসা দেখতে পাইনি। আমরা জনসেবার জন্য, ইয়াস এবং করোনা পরিস্থিতিতে আলাপনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিলাম। তাতে কেন্দ্র সিলমোহরও দিয়েছিল।’’
মুখ্যসচিব হিসাবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রতিবাদ করতে পারেন। আলাপন এখন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করবেন। মমতা বললেন, ‘‘করোনা কালে ওঁকে আমাদের চাই। রাজ্যের, দেশের গরিব, দুর্বল, তফসিলি জাতি, তফসিলি জনজাতি, সংখ্যালঘু মানুষের জন্য কাজ করছেন আলাপন। ওরা আমার চিঠির পর্যন্ত উত্তর দেয়নি।’’
এমন নির্দয় প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগে দেখিনি। প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি। ওঁরা রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেননি।
মমতা বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমেকে ইয়াস ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখতে আমাকে তাঁর সঙ্গে যেতে বলেননি। করোনা এবং ইয়াস পরিস্থিতিতে লড়াইয়ের জন্য ওঁকে রাখা হয়েছে। মুখ্যসচিবকে ডেকে নিচ্ছেন? এমনটা গত ৭৪ বছরে হয়নি।’’
এখন মুখ্যসচিবকে ডাকলে জনসেবার কাজে ক্ষতি হবে। এটা চিঠিতে উল্লেখ করেছিলাম। কিছু ক্ষণ আগে রাজ্যের কাজে আলাপনকে নিয়ে কেন্দ্র থেকে একটি চিঠি আসে। আলাপনকে দিল্লিতে যোগ দিতে বলা হয়েছে। আলাপনকে নর্থ ব্লকে যোগ দিতে ফের চিঠি কেন্দ্রের। তাঁকে অবিলম্বে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে: মমতা