তৃণমূলের সেই পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত।
দলের কর্মসূচিতে নেতৃত্বের ছবি-বিতর্কে ইতি টেনে এ বার স্পষ্ট নির্দেশিকাই দিল তৃণমূল কংগ্রেস। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে প্রস্তাবিত ‘সংহতি মিছিল’-এ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি রাখতেই বলে দিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। মিছিলে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ইত্যাদির নমুনা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে জেলায় জেলায়।
কেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি নেই? দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচিকে সামনে রেখে এই প্রশ্নই তুলেছিল তৃণমূলের একাংশ। দলের ওই সভামঞ্চে ছবি ছিল শুধু মমতারই। তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন একেবারে প্রকাশ্যে এসে পড়ে। তারপর ২২ জানুয়ারি ফের রাজ্যব্যাপী গৃহীত এই সংহতি মিছিলের কর্মসূচি নিয়ে সেই অবস্থানেই অনড় রইলেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। ওই কর্মসূচি সম্পর্কে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী জেলায় জেলায় যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন, তার সঙ্গেই এই প্রচারের বিষয় ও আঙ্গিক কেমন হবে, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে সে কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘মিছিলের পথ ব্যানার, ফেস্টুনে সাজাতে হবে। সেই ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও মঞ্চের ব্যাকড্রপ কেমন হবে, তা-ও পাঠানো হয়েছে।’
অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন রাজ্য জুড়ে ‘সংহতি যাত্রা’র দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। কালীঘাট মন্দির থেকে মিছিল করে পার্ক সার্কাস ময়দানে গিয়ে সভা করবেন তিনি। সব ধর্মের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পথে যে সব ধর্মীয় স্থান পড়বে সেগুলিতেও যাওয়ার কথা রয়েছে মমতার। তিনি বিকেল ৩টেয় কলকাতায় এই মিছিল শুরু করবেন। ঠিক সেই সময়েই দলের জেলা কমিটিগুলিকে মিছিল শুরু করতে বলেছে তৃণমূল। দলের জেলা নেতৃত্ব ও অন্যান্য শাখা সংগঠনগুলির কাছে পাঠানো চিঠিতে বক্সী লিখেছেন, ‘এই কর্মসূচি সাফল্যমণ্ডিত করতে সব রকমের আয়োজন করতে হবে।’
সেই চিঠির সঙ্গেই ব্যানার ইত্যাদি কেমন হবে, তার নমুনার ছবি সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে পাঠিয়েছে তৃণমূল। প্রসঙ্গত, দলের অন্দরে নবীন-প্রবীণ বিতর্কের মধ্যেই গত নভেম্বর মাসে নেতাজি ইনডোরের সভায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ছবি না-থাকায় বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। নবীন অংশের প্রতিনিধিদের সেই প্রশ্ন নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় হয়েছিল তৃণমূলে। প্রসঙ্গত, সেই সভার আয়োজনের দায়িত্ব মমতা দিয়েছিলেন বক্সীকেই। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি একাধিক সভায় নবীনদের সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বার সরকার গঠনের পরে দল ও প্রশাসনের সব দফতরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দিষ্ট একটি ছবি বেছে দিয়েছিলেন দলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ বার ছবি-বিতর্কের পরে দলের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ভাবে হতে চলা এই প্রথম কর্মসূচিতে নেতাজি ইনডোরের যে প্রতিচ্ছবি তৈরি হতে চলেছে তা দলের অন্দরে নেতৃত্বের বার্তাই।