Pegasus

Pegasus Software: ভোটের আগে মমতার ফোনেও আড়ি পাতা হয় পেগাসাস ব্যবহার করে, দাবি তৃণমূলের

‘পেগাসাস স্পাইওয়্যার’ নিয়ে দেশজোড়া আলোড়নের মধ্যে এই ‘তথ্য’ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১ ০৫:৪০
Share:

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের রণকৌশল স্থির করতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক দিন বৈঠকে বসেছিলেন সুব্রত বক্সী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোর। আলোচনা চলাকালীন তাঁরা কেউ মোবাইল ব্যবহার করেননি। তৃণমূলের অভিযোগ, ফোনে ‘নজরদারি’ চালিয়ে সেই বৈঠকের খবরও ‘তুলে নেওয়া’ হয়েছিল।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, যদি ফোন চালু (অন) থাকাকালীন ‘পেগাসাস স্পাইঅয়্যার’ হ্যান্ডসেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে ফোন বন্ধ করে রাখলেও সেটি কাজ করতে পারে। তৃণমূলের শীর্ষ মহলের সন্দেহ, ওই বৈঠকের ‘খবর’ বার করতে সেই প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়েছিল।

‘পেগাসাস স্পাইঅয়্যার’ নিয়ে দেশজোড়া আলোড়নের মধ্যে এই ‘তথ্য’ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি আরও বড় মাত্রা পেয়েছে ‘নজরদারির’ তালিকায় অভিষেক এবং পিকে’র নাম প্রকাশ পাওয়ায়। এ প্রসঙ্গে অভিষেকের টুইট, ‘‘হেরোদের জন্য দু’মিনিটের নীরবতা! ইডি, সিবিআই, এনআইএ, আইটি, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অর্থবল এবং পেগাসাস সঙ্গে নিয়েও ২০২১ সালে অমিত শাহের মুখরক্ষা হয়নি। সামনের বার আরও ভাল প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন!’’ পিকে’র দাবি, তাঁর ফোনে যে আড়িপাতা চলছে, তা তিনি বুঝতেন। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত হ্যাকিং! যদিও আমি পাঁচ বার হ্যান্ডসেট বদল করেছি। তবে তা সত্ত্বেও হ্যাকিং যে চলছে, তার প্রমাণ তো মিলেছে।’’

Advertisement

সংবাদ পোর্টাল ‘দ্য অয়্যার’ ফোনে আড়িপাতার এই অভিযোগ সামনে আনার পর থেকে বিরোধীদের আক্রমণের নিশানা হয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। অন্য সব কাজ মুলতুবি রেখে গুরুতর এই অভিযোগ নিয়ে আজ, মঙ্গলবার সংসদের উভয় কক্ষেই আলোচনা চেয়েছে তৃণমূল। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এক তরফা ভাবে নিজেদের কথা বলেছে। মঙ্গলবার লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব এনে এই বিষয়ে আলোচনা চাই।’’ একই দাবি করে আলোচনার জন্য এ দিনই নির্দিষ্ট নোটিস দিয়েছেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের আগে আড়িপাতার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। এই দু’টি নির্বাচনে বিজেপি যে আসন পেয়েছে, তাতে এই আড়িপাতার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হোক।’’

তৃণমূল সূত্রে খবর, ২১ জুলাই কর্মসূচি শেষ হলে মোবাইল ফোনে আড়িপাতার বিরুদ্ধে রাজ্যে বড় আন্দোলন করা হবে দলের তরফে। গাঁধী মূর্তির নীচে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা স্বয়ং। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে দিল্লিতে সাংসদেরাও সংসদের ভিতরে ও বাইরে প্রতিবাদ ও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

এ রাজ্যে বিরোধীরা অবশ্য তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধেও আড়ি পাতার পাল্টা অভিযোগে সরব। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘পেগাসাস নিয়ে যা বলা হচ্ছে, সব অসত্য অভিযোগ। মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েই তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ তুলেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে মামলাও করেছিলেন তিনি। এই সব কাণ্ডের পর তৃণমূল নেতাদের মুখে অন্য কারও বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মানায় না!’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বলেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে যা প্রকাশিত হয়েছে, তা বিপজ্জনক এবং ভয়ঙ্কর। কিন্তু এ রাজ্যে গত ১০ বছর ধরেই রাজনৈতিক নেতা, আমলাদের ফোনে আড়ি পাতা হয়। এখানে এটা নতুন ঘটনা নয়!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement