—ফাইল চিত্র।
পূর্ব ভারতে প্রস্তাবিত ‘ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর’ বা পণ্য করিডর গড়ে তোলার পথে বাধা দূর করতে কেন্দ্রীয় শিল্প-বাণিজ্য ও রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, এই পণ্যপথ নির্মাণে রাজ্য সরকার সব রকম সহযোগিতা করছে। তার পরেও বিহারের শোননগর থেকে এ রাজ্যের ডানকুনি পর্যন্ত প্রস্তাবিত পণ্যপথ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। তা দূর করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মমতা।
লুধিয়ানা থেকে মোগলসরাই পর্যন্ত ১১৯২ কিলোমিটার, মোগলসরাই থেকে বিহারের শোননগর পর্যন্ত ১৬২ কিলোমিটার এবং শোননগর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত ৫৩৮ কিলোমিটার পথকে নিয়ে এই পণ্য করিডর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল অনেক আগে। উত্তর ভারতে এই করিডরের সূচনা। মোগলসরাই থেকে ডানকুনি পর্যন্ত তা বিস্তৃত হওয়ার কথা ছিল। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায় তৈরি হওয়া এই প্রকল্পকে প্রধানত পণ্য পরিবহণের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করছে কেন্দ্র। প্রকল্পটি রূপায়িত হয়ে গেলে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণে পৃথক রেলপথ ব্যবহার করা সম্ভব হবে। তাতে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণের সময়
অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, পণ্যপথের প্রথম দু’ভাগের নির্মাণে কোনও বাধা না-থাকলেও শেষ পর্যায় অর্থাৎ শোননগর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত পথের নির্মাণ এখনও পর্যন্ত অনিশ্চিত। অথচ কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রকল্পটির জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করছে রাজ্য। মমতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানিয়েছেন, পণ্যপথের তৃতীয় ভাগের জন্য জমি পেতে রাজ্যের সহযোগিতা চেয়েছিল রেল। প্রয়োজনীয় সেই জমির ৭০ শতাংশ অধিগ্রহণ করা হয়ে গিয়েছে এবং ৬০ শতাংশ জমি রেলকে হস্তান্তরও করেছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, রেল এই প্রকল্পের প্রথম দু’টি ভাগের কাজ করবে সরকারি পরিকাঠামোয়। কিন্তু এ রাজ্যে প্রকল্পের তৃতীয় ভাগের নির্মাণ ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ (পিপিপি) বা বেসরকারি সংস্থা সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কেন করা হবে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, রাজ্য সরকার তো বেশির ভাগ জমিই জোগাড় করে দিয়েছে। তা হলে শোননগর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত পণ্যপথের নির্মাণে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি কেন?
পশ্চিমে পণ্য করিডর তৈরির কাজ ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সেই জায়গায় পূর্ব ভারতের এই প্রকল্প ঘিরে এত সমস্যা কেন, তা-ও জানতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে মমতার অনুরোধ, প্রকল্পটি যাতে কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছয়, সেটা বিবেচনা করা হোক। তা হলে জমি অধিগ্রহণ কাজে আসবে।
কিন্তু রেল আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ডানকুনি পর্যন্ত প্রকল্পটিকে নিয়ে যাওয়া কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে চর্চা-জল্পনা চলছে। পুরো জমি হাতে না-পেলে কাজ শুরু করা যে সম্ভব নয়, তা-ও স্পষ্ট করে দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল।