রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে আরও এক বার ওড়িশায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নিজেই সে কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে যাবেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশী পাঁজা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কটক এবং ভুবনেশ্বর দুই জায়গাতেই যাবেন তিনি। এই দুই জায়গার হাসপাতালে রাজ্যের যে আহত রোগীরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের দেখতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ওড়িশা-সফর। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ২০৬ জন আহত ব্যক্তি বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি রয়েছেন। মূলত তাঁদের চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছে কি না, সেটা দেখতেই ট্রেন দুর্ঘটনার পর দ্বিতীয় বার ওড়িশা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯০। দেহগুলির শনাক্তকরণ হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে ৭৩ টি মৃতদেহ রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। বাকি মৃতদেহগুলি শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সঙ্কটের মুহূর্তে তিনি রাজ্যবাসীর পাশেই রয়েছেন। আগের ঘোষণা মতো দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ১ লক্ষ টাকা, তুলনায় কম আহতদের ২৫ হাজার টাকা এবং আতঙ্কে ভুগছেন, এমন ব্যক্তিদের দশ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মৃতদের পরিবার পিছু একটি করে হোম গার্ডের চাকরি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া হতাহতদের পরিবারগুলিকে আগামী ৪ মাস ২ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্ঘটনায় যাঁদের হাত-পা বাদ গিয়েছে, তাঁদের পরিবারের এক জনকেও হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার নবান্ন টোল প্লাজায় দুর্ঘটনায় মৃতদের শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই রেল দুর্ঘটনা নিয়ে মুখ খুলে তিনি বলেন, “আমি চাই মানুষ সত্যটা জানুক। এটা সত্য চাপা দেওয়ার সময় নয়।” ট্রেন দুর্ঘটনায় রেলের সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনার সময় আমি সিবিআই তদন্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু তার কোন ফল এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি। ১২ বছর কেটে গিয়েছে। সাঁইথিয়ার রেল দুর্ঘটনাতেও আমরা সিবিআই দিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানেও কোনও ফল পাওয়া যায়নি। এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “সিবিআই তো অপরাধমূলক বিষয়ে তদন্ত করে। কিন্তু এটা তো অ্যাক্সিডেন্টের বিষয়। এর জন্য রেলওয়ে সেফটি কমিশন রয়েছে। তারা এই নিয়ে দ্রুত তদন্ত করছে।” কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের কথা চিন্তা করুন। তাঁদের পাশে দাঁড়াব, নাকি ওরা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য রোজ একটা করে রাজনৈতিক বাতাস দেবে, সেটা নিয়ে তর্ক করব?”