শালবনির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।
আগামী শনিবার মেদিনীপুর জেলা সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনের প্রথমার্ধে তিনি এগরায় পৌঁছতে পারেন। বিকেলে তিনি শামিল হতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রায়। সেই রাজনৈতিক কর্মসূচিটি হবে শালবনিতে। গত ১৬ মে এগরার খাদিকুলে অবৈধ বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় নিহত হন অন্তত ৯ জন। তার পরই প্রশাসনিক মহলে খবর ছিল সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে যেতে পারেন তিনি, এমন সম্ভাবনার কারণেই এগরায় যাওয়ার কর্মসূচি স্থির করতে পারেনি নবান্ন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগের বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের পরেই এগরা যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো আগামী শনিবার প্রথমার্ধে এগরার খাদিকুলে গিয়ে সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি এলাকার পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী। কারামন্ত্রী অখিল গিরি জানিয়েছেন, প্রশাসনের তরফ থেকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের কথা জানানো হয়েছে। তবে তিনি কোন সময় আসবেন তা পরে জানানো হবে।
রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, খাদিকুলে বিস্ফোরণের পর দিন তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসাবে সেখানে গিয়েছিলেন পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা বিক্ষোভের মুখে পড়েন। ইতিমধ্যে সেখানে গিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি করে এসেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপিকে জমি ছাড়তে নারাজ তৃণমূল। তাই বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করে যাবতীয় পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী। এমন ভাবনা থেকেই এগরা সফরে যাচ্ছেন তিনি। অপর দিকে ওই দিন বিকেলেই জনসংযোগ যাত্রার এক মঞ্চে আবারও একসঙ্গে দেখা যাবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও মুখ্যমন্ত্রীকে। গত মাসেই উত্তরবঙ্গের ইংরেজবাজারে যৌথ ভাবে সভা করেছিলেন তাঁরা।
মালদহের ইংরেজবাজারের সেই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন জনসংযোগ যাত্রার শেষ ভাগে তিনি আবারও অংশ নিতে যাবেন। কিন্তু তার আগেই আবারও শালবনির মঞ্চে হাজির হতে পারেন তিনি। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত শনিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে কলকাতায় ডেকে জেরা করেছিল সিবিআই। কলকাতা হাই কোর্টের সবুজ সঙ্কেতে অভিষেককে কলকাতায় জেরার জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বাঁকুড়ায় নিজের জনসংযোগ যাত্রার কর্মসূচি ছেড়ে শুক্রবার তিনি কলকাতায় ফিরেছিলেন। পর দিন সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসের দফতরে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হয়েছিলেন অভিষেক। মনে করা হচ্ছে, সিবিআইয়ের এমন তড়িঘড়ি তলবের প্রতিবাদে এবং অভিষেককে উৎসাহ দিতেই শালবনির মঞ্চে হাজির হবেন মমতা। সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে কেন্দ্রের মোদী সরকারের ‘আক্রমণ’-এর বিরুদ্ধে সুর চড়াতে পারেন তিনি।