মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
আমপানের ক্ষতিপূরণ দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ যখন ছড়িয়ে পড়েছে, তখনই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পরপর দু’টি প্রশাসনিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও বৈঠকই ভার্চুয়াল নয়, হওয়ার কথা সরাসরি। সে ক্ষেত্রে করোনা পর্বের পর থেকে এটাই নবান্ন, বাড়ির অফিসের বাইরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম সরাসরি বৈঠক।
আপাত স্থির আছে, উত্তর ২৪ পরগনার বৈঠকটি হবে ১০ জুলাই, বেলা সাড়ে ১২টায় রাজারহাটের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বৈঠকের স্থান নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। হবে ১৩ জুলাই বেলা ১২ টায়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে অল্প কয়েকটি প্রয়োজনীয় দফতরকে ডেকে নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে অভিযোগ মাথাচাড়া দেওয়ার পর মমতা নিজে পরিস্থিতির মোকাবিলার ভার কাঁধে তুলে নিয়েছেন। অনেক অভিযোগই যে সত্য তা জানার পরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে শাসকদল। সরকারের কোপের মুখে পড়েছেন বেশ কয়েক জন বিডিও। এই অবস্থায় আমপানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দুই ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠক ডাকা রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকমহল।
সরকারি ভাবে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও সূত্রের দাবি, বৈঠক শেষ পর্যন্ত হলে, সেখানে সামগ্রিক প্রশাসনিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি পঞ্চায়েত স্তরে কাজকর্মও খতিয়ে দেখতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের এখন অন্যতম মাথাব্যথা করোনা পরিস্থিতি। ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবও দেখা যাচ্ছে। সেই জোড়া সমস্যা মোকাবিলায় দিক-নির্দেশ করতে পারেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় দল ঘুরে যাওয়ার মাসখানেক পরেও আমপানে কেন্দ্রীয় সাহায্য মেলেনি। শুধুমাত্র এককালীন এক হাজার কোটি টাকা অগ্রিম হিসেবে এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। ফলে রাজ্যকে টাকা জোগাড় করে ত্রাণ এবং পুনর্গঠনের কাজ সামলাতে হচ্ছে। এই দুই জেলায় পুনর্গঠনের কাজে যাতে খামতি না থাকে, সে ব্যাপারে জোর দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি, পদাধিকারী ও সদস্যদের ডাকা হবে বলে জানা গিয়েছে। নীচের তলায় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের আসতে বলা হবে। আমপান-ক্ষতিপূরণের যে অভিযোগ উঠেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী এখনও যেগুলি ঠিক বলে জানতে পেরেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কড়া বার্তা দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।