মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তৃতীয় দফায় সরকারে আসার এক মাসের মধ্যেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনটি প্রতিশ্রুতির প্রস্তাব পাশ হয়েছে। সেগুলি রূপায়ণ করতে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্সও গড়ে দিয়েছেন মমতা।
গত বিধানসভা ভোটের ইস্তাহারে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল, পরিবারপিছু আর্থিক সাহায্য, স্বল্প সুদে শিক্ষার্থীদের ক্রেডিট কার্ড এবং দুয়ারে রেশন চালু করা। এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রিসভা এই সব প্রস্তাবই অনুমোদন করেছে। বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাধারণ শ্রেণিভুক্ত প্রতিটি পরিবারের এক জনকে ৫০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি বা জনজাতিভুক্ত পরিবারের এক জনকে এক হাজার টাকা করে অর্থসাহায্য দেওয়া হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা দেবে সরকার। মাত্র ৪% সুদে পড়াশোনার জন্য ঋণের সুবিধা দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের ১০ বছর সময় দেওয়া হবে। চাকরিবাকরি পেয়ে আস্তে আস্তে মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পরিশোধের সুযোগ থাকবে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে এটা বিশেষ সহায়ক হবে।”
দুয়ারে রেশন পদ্ধতি চালু করার বিষয়টিকেও এ দিন ছাড়পত্র দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ইতিমধ্যেই কয়েকটি জেলায় এই প্রকল্পের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়ে গিয়েছে।
তিনটি বিষয়েই টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে মুখ্যসচিবের অধীনে। প্রকল্পের পরিকল্পনা, প্রয়োগ-সহ সব বিষয়ই খতিয়ে দেখবে টাস্ক ফোর্স। মুখ্যসচিব ছাড়াও তাতে থাকবেন স্বরাষ্ট্রসচিব, অর্থসচিব, শিক্ষাসচিব, খাদ্যসচিব, নারী-শিশু-সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা পুলিশে আড়াই হাজার নিয়োগের প্রস্তাবও পাশ হয়েছে মন্ত্রিসভায়।
রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত, যৌনকর্মী, রূপান্তরকামী, হকার, রিকশা ও ঠেলাওয়ালাদের রেশনের চাল পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট লোকেরা সরাসরি সাধারণ মানুষের উপরে নির্ভরশীল। কোভিডের নিয়ন্ত্রণ বিধির জেরে তাঁদের রুজিরোজগার বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই তাঁদের পাঁচ কিলোগ্রাম করে চাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মাধ্যমে চাল বিলির কাজ করবে খাদ্য দফতর।