Mamata Banerjee

আদিবাসী দিবসে যোগ দিতে ঝাড়গ্রামে মমতা

মঙ্গলবার বিকেলেই মমতার ঝাড়গ্রাম পৌঁছনোর কথা। কাল, বুধবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৩ ০৬:১৮
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

বিরুদ্ধ প্রচার সামলে পঞ্চায়েত ভোটেও জঙ্গলমহলের আদিবাসী এলাকায় নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে পেরেছে তৃণমূল। এ বারে বিশ্ব আদিবাসী দিবসে জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, লোকসভা ভোটের আগে এই ভাবেই জেলা সফর শুরু করে দিলেন তিনি।

Advertisement

আজ, মঙ্গলবার বিকেলেই মমতার ঝাড়গ্রাম পৌঁছনোর কথা। কাল, বুধবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি। গত ১৫ নভেম্বর বিরসা মুন্ডার জন্মদিনেও বেলপাহাড়িতে প্রশাসনিক জনসভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২১-এ অবশ্য বিধানসভা ভোটে জয়ের পরে আদিবাসী দিবসে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাঞ্চি শাড়ি গায়ে জড়িয়ে আদিবাসী কন্যাদের হাত ধরে নাচের তালে পা মিলিয়েছিলেন। এ বারে জঙ্গলমহলের প্রতি মমতা কী বার্তা দেন, তাই নিয়ে চর্চা চলছে।

মুখ্যমন্ত্রীর স্লোগান ছিল, জঙ্গলমহল হাসছে। অথচ ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে তো বটেই, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটেও ঝাড়গ্রাম আসনটি বিজেপির দখলে যায়। সেই ধাক্কা সামলে ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে জয়ে ফেরে তৃণমূল। তবে এ বার পঞ্চায়েত ভোটের আগে কুড়মিদের জাতিসত্তার আন্দোলন, কুড়মি-আদিবাসী ভাগাভাগির অভিযোগ ঘিরে কিছুটা শঙ্কায় ছিল শাসক শিবির। বিশেষত মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার অভিযোগে কুড়মি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ঘিরে পারদ চড়েছিল। তার প্রতিবাদে পঞ্চায়েতে কুড়মিরা নির্দলে লড়েন। কিছু আসনে তাঁরা জিতেছেন বটে, তবে তৃণমূলকে বিশেষ বেগ দিতে পারেননি। বিরোধীশূন্য করে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ পেয়েছে তৃণমূল। ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির সব ক’টি ও বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতেও সংখ্যাগরিষ্ঠ তারাই।

Advertisement

মমতা বারবার বুঝিয়েছেন, আদিবাসী-জনজাতি, কুড়মি-সহ গোটা জঙ্গলমহলই তাঁর বিশেষ প্রিয়। কুড়মিদের দাবি মেনে এ বার পঞ্চায়েত ভোটের পরই করম পরবের পূর্ণ ছুটি ঘোষণা করেন তিনি। আদিবাসীদের জন্যও একগুচ্ছ ঘোষণা করেছেন। তবে কুড়মিদের জনজাতি তালিকাভুক্তির দাবির বিরোধিতা করছে আদিবাসী সংগঠনগুলি। ফলে এই স্পর্শকাতর বিষয়টিকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করে আসন্ন লোকসভায় ঝাড়গ্রাম আসনের পুনর্দখলই তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ। দলের প্রবীণ নেতাদের একাংশের মতে, আদিবাসী ও কুড়মি দুই সম্প্রদায়ের ভোটই জরুরি। ফলে, আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে এলেও লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে নেত্রী নিশ্চয়ই দুই সম্প্রদায়েরর উদ্দেশেই বার্তা দেবেন।

জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘এলাকায় শান্তি আছে। পর্যটন বাড়ছে। সামাজিক প্রকল্পের সুফল মিলছে। পঞ্চায়েত ছিল সেমিফাইনাল। লোকসভাতেও বিপুল জয়ের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।’’ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু পাল্টা, ‘‘পঞ্চায়েতে ভোট লুট হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে লোকসভা ভোট হবে। মুখ্যমন্ত্রী এসে যতই প্রতিশ্রুতি দিন, লাভ হবে না।’’

এ বছর আদিবাসী দিবসে বিধানসভা ভিত্তিক কর্মসূচি পালনের নির্দেশ এসেছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেও। কিন্তু জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সংগঠনের যা হাল, তাতে কর্মসূচি পালনে সংশয়। ঝাড়গ্রামে যেমন কর্মসূচি করার পরিস্থিতিই নেই, জানাচ্ছেন কর্মীদের একাংশ। জেলা সভাপতি তাপস মাহাতো বহু দিন নিষ্ক্রিয়। তবে কুড়মি আন্দোলনে তাঁকে দেখা যায়। এখন দল চালাচ্ছেন জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রসেনজিৎ দে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আদিবাসী প্রধান এলাকা, তবে বাস্তব বুঝে কর্মসূচি হবে।’’ বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা পর্যবেক্ষক সুজিত অগস্তির কটাক্ষ, ‘‘আদিবাসীদের পাশে কংগ্রেস দাঁড়ায়নি। বিজেপির বিরোধিতায় হাস্যকর কর্মসূচি নিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement