মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতাদের একাংশের তোলাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। বিধাননগর ও বড়বাজারে পরপর দুই ঘটনায় পুলিশি সক্রিয়তায় দলের অন্দরে এই বার্তাই গিয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, শহুরে ভোটার বিরূপ হওয়ার পিছনে এই ধরনের ঘটনাকে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ নেতৃত্বে কঠোর মনোভাব নিয়েছেন। বিধাননগরে পুলিশি হানার মুখে গা ঢাকা দিতে হয়েছে তৃণমূলের কাউন্সিলরকে। আর বড়বাজারে দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে পোস্তা থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সচিন পটেল নামে এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, বড়বাজার থানায় ব্যবসা সংক্রান্ত একটি মামলা মিটিয়ে দেবেন বলে প্রায় ছ’লক্ষ টাকা চান তরুণ তিওয়ারি নামে ওই যুব তৃণমূল নেতা। নিজের অফিসে ডেকে এরপর ব্যবসায়ীর থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নেন তিনি। দলের কাছে এই অভিযোগ আসার পর তরুণকে সব পদ থেকে সরিয়ে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সায়নী ঘোষ এ দিন বিকেলে প্রেস বিবৃতিতে সে কথা জানিয়েছেন। তারপরই পোস্তা থানার পুলিশ তরুণের সঙ্গে তাঁর দুই সহযোগী রাহুল পুরোহিত ও রাহুল সিংহ নামে দুই তৃণমূল কর্মীকেও গ্রেফতার করে। যদিও তরুণ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশ সমস্তটাই খতিয়ে দেখছে।
এই ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূল দলে কেউ যোগ দিলে তাঁর হাতেখড়ি হয় চুরি দিয়ে। আগে ধানি চোর, তারপর চারাপোনা চোর এবং মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ হলে তিমি মাছ চোর। যুব নেতা যখন তখন নিশ্চই আমেরিকান কার্প মাপের চোর হবে। আগে একজন চাকরি চুরির অভিযোগে সিবিআই, ইডি হেফাজতে ছিল। তাঁর সঙ্গে তো বর্তমান এক সাংসদের উপহার দেওয়া, নেওয়া, খুব দহরম-মহরমের সম্পর্ক ছিল। এখন দেখার এর সঙ্গে কার কী সম্পর্ক রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, দলের একাংশের তোলাবাজি ও এই রকম অনৈতিক কাজ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তৃণমূলকে। সম্প্রতি বিধানননগর পুরনিগমের এক কাউন্সিলররের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা দাবি করে স্থানীয় এক প্রোমোটরের উপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। আক্রান্ত প্রোমোটরের অভিযোগের ভিত্তিতে তল্লাশি শুরু করলেও বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই কাউন্সিলর বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন। এই অবস্থায় বড় বাজারের ঘটনায় আরও চাপে পড়ে গিয়েছে শাসকদল। তাই এই অভিযোগটি নিয়ে বসে না- থেকে দ্রুত সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক স্তরে পদক্ষেপ করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।