মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তফসিলি জাতি-উপজাতি মানুষের সমর্থন সরে যাওয়ায় দলের সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃত্বে বদলের সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই বৈঠকের আগে এই অংশের বিধায়কদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। সেখানে ছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সী। পরে সেখানে পৌঁছে মমতাও এই সংরক্ষিত আসনের দলীয় বিধায়কদের মতামত শোনেন। পরে দলীয় বিধায়কদের বৈঠকে তফসিলি জাতি-উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জনসংযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই বৈঠকের আগে তফসিলি জাতি-উপজাতি বিধায়কদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন তৃণমূলের প্রশান্ত কিশোর। সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি প্রকল্প পৌঁছনয় বাধা কোথায়, বৈঠকে এই অংশের বিধায়কদের কাছে তা জানতে চান প্রশান্ত ও যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক চলাকালীনই এই সেখানে উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি প্রকল্প রূপায়ণের পাশাপাশি সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির উপরে জোর দিতে বলেন। ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজেও বিধায়কদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলেছেন তিনি। উত্তরবঙ্গ ও পশ্চিমাঞ্চলে তফসিলি জাতি-উপজাতি সংরক্ষিত আসনে লোকসভায় বড় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল।
তিন বিধানসভা উপনির্বাচনে দলীয় কাজ নিয়েও সংশ্লিষ্ট সকলকে পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। খড়্গপুর বিধানসভার উপনির্বাচনের দলীয় কাজ থেকে মানস ভুঁইয়াকে ‘দূরে’ থাকতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর কেন্দ্রে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে হেরেছিলেন মানসবাবু। তাঁকে করিমপুরের কাজ করতে বলা হলেও পরে তা নাকচ হয়ে যায়। এই কেন্দ্রের দায়িত্ব পুরোপুরি শুভেন্দু অধিকারীর হাতে দিয়েছেন মমতা। দলীয় বৈঠকে করিমপুর আসনের কাজ স্থানীয় সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও কালিয়াগঞ্জের দায়িত্ব দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষকে দিয়েছেন মমতা। বৈঠকে উপস্থিত সাংসদ শতাব্দী রায় ও নুসরত জাহানকে উপনির্বাচনের প্রচারে নিতে বলেছেন মমতা।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে ১০-১২ জন বিধায়কের শিথিলতার উল্লেখ করে তাঁদের সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী শ্যমাল সাঁতরা নিজের আলাদা ওয়েবসাইট করে জনসংযোগ কর্মসূচি নেওয়ায় মৃদু ভর্ৎসনা করা হয় তাঁকে। এদিন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাঁকুড়ার সংগঠন দেখতে বলেন। দলে জল্পনা থাকলেও এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। আসেননি অন্য দুই বিধায়ক দেবশ্রী রায় ও অরিন্দম ভট্টাচার্য।