(বাঁ দিকে) ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ডিভিসির পাশাপাশি পড়শি এবং ‘বন্ধু’ রাজ্য ঝাড়খণ্ডের জলেও চাপ তৈরি হচ্ছে বাংলায়। বিষয়টি নিয়ে তাই রবিবারই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দুপুরে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে মমতা নিজেই সেই খবর দিয়েছেন। দুপুর দেড়টায় মমতা লিখেছেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের জলে ইতিমধ্যেই বানভাসি হতে শুরু করেছে বাংলা। আমার সঙ্গে হেমন্তজির এই মাত্র কথা হল। এই ‘মানবসৃষ্ট’ বন্যা পরিস্থিতি আমি ওঁকে সামলে দিতে অনুরোধ করেছে।’’
শনিবারই কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নবান্ন। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা না করেই জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিভিসি। যা রাজ্যের মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এর পরেই শনিবার ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট জলাধার থেকেও জল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যে জল এসে জমা হয় পাঞ্চেতে। রবিবার বাধ্য হয়েই পাঞ্চেত থেকে বাড়তি জল ছাড়তে হয় বলে জানান আধিকারিকেরা।
প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডের উপরে
নিম্নচাপ অবস্থান করছে। তার প্রভাবে ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি চলছে। সেখানকার তেনুঘাট
জলাধার থেকে শনিবার দেড় লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। রবিবার সকালেও জল ছেড়েছে
তেনুঘাট। মমতা জানিয়েছেন, তিনি বাংলার এই পরিস্থিতি নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁর কথায়, ‘‘তেনুঘাট থেকে এই হঠাৎ বড় পরিমাণে জল ছাড়ার বিষয়ে আমার সঙ্গে হেমন্তজির কথা হল। ওঁকে জানালাম, ওই জল বাংলাকে ভাসাতে শুরু করেছে। আর এই বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভাবেই ‘মানবসৃষ্ট’। আমি ওঁকে অনুরোধ করেছি যাতে উনি দয়া করে এই পরিস্থিতি সামলে দেন।’’
হেমন্তের দল জেএমএম বা ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা কেন্দ্রের বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক। তাছাড়া এর আগে যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি হেমন্তকে গ্রেফতার করেছিল, সেই সময়েও তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকেই সমর্থন করেছিলেন মমতা। সেই সুবাদেই হেমন্তের শাসনাধীন রাজ্য মমতার ‘বন্ধু’ রাজ্য। মমতা বাংলার বিপদের সময়ে সেই ‘বন্ধু’র সঙ্গেই সাহায্য চেয়েছেন।
পাশাপাশি, মমতা জানিয়েছেন, তিনি নিজেও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। রাজ্যে গত কয়েক দিনের বৃষ্টি এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বাংলায়, সে ব্যাপারে তিনি উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাশাসকের সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন। আগামী ৩-৪ দিন বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার এবং পরিস্থিতির দিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ নজর রাখার নির্দেশও দিয়েছেন তাঁদের।