মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। রাজ্য সরকারের দাবি, খাওয়ার জলের পাইপলাইন বসানোর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। কিন্তু অভিযোগ, অনেক জায়গায় পাইপলাইন বসলেও খাওয়ার জল পৌঁছচ্ছে না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন খাওয়ার জল পৌঁছচ্ছে না, তার তিনটি কারণ ব্যাখ্যা করে ‘দোষী’দের খুঁজে বার করার কথা বললেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, টেন্ডার দিয়ে কাজের বরাত পাওয়ার পরেও যাঁরা বা যে সব ঠিকাদার সংস্থা ঠিক মতো কাজ করছেন না, তাঁদের কালো তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি জরিমানার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বিধানসভায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। ওই বৈঠকে ছিলেন বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার-সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। এ ছাড়াও কৃষি, সেচ দফতরের আধিকারিকেরাও ছিলেন সোমবারের বৈঠকে। ওই বৈঠকেই বেশ কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, ‘‘সরকারি টাকা যেন কোনও ভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার না হয়।’’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক রং না-দেখেই ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।
পাইপ বসানোর পরেও কেন খাওয়ার জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছচ্ছে না, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তিনটি কারণের কথা বলেছেন। এক, ব্যক্তিগত কাজে পাইপলাইন কাটা। দুই, ঠিকাদার সংস্থার সমীক্ষা না-করেই কাজ করে যাওয়া। তিন, কেন্দ্রীয় সংস্থার অনুমতি না-পাওয়া। মমতার কথায়, ‘‘অনেকেই খাওয়ার জলের পাইপলাইন কেটে তা ঘুরিয়ে অন্য কাজে ব্যবহার করছেন। এটা অপরাধ। অনেকেই জানেন না। পুলিশকে বলব উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। ফৌজদারি মামলা রুজু হতে পারে।’’ পাশাপাশি, যে সব ঠিকাদার সংস্থা টেন্ডার পাওয়ার পরেও ঠিক মতো কাজ করেনি, তাদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সব সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করে জরিমানা করার কথাও বলেন তিনি।
এ ছাড়াও, বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ, সেই সব সংস্থা অনুমতি না-দেওয়ায় পাইপলাইন বসানো এবং বাড়ি বাড়ি খাওয়ার জল পৌঁছনোর কাজে সমস্যা হচ্ছে। সেই তালিকায় আছে রেল, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড (আইওসিএল), ন্যাশনাল হাইওয়ে, ডিভিসির মতো সংস্থা। অনুমতি না-পাওয়ার ফলে কত পরিবার ভুক্তভোগী, তা-ও তালিকা ধরে বলেন মমতা। পুলিশ-প্রশাসনকে নিয়মিত নজরদারি চালানোর নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।