সিপিএম ও কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
সিপিএমের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস যত সিপিএমের কাছে আসছে, তাদের সাইনবোর্ডটা তত হারিয়ে যাচ্ছে।’’ সিপিএমের উদ্দেশেও মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘৩৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। কিছুই করেননি। ২০১৬ সালে লাড্ডু পেয়েছিলেন। এবারে পাবেন রাজভোগ।’’
এ রাজ্যে কংগ্রেস যে ভূমিকা নিয়েছে তাতে বরাবরই বিজেপি ও বামেদের সঙ্গে এক বন্ধনীতে রেখেছেন তৃণমূলনেত্রী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তারা বাম তো বটেই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে কংগ্রেসকে কার্যত আত্মসমীক্ষার পরামর্শ দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘যেখানে আঞ্চলিক দল আছে সেখানে কংগ্রেস কিছু করতে পারছে না। সেখানে তাদের ভাড়ার শূন্য। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে একা আছে তাই সেখানে সরকার গড়েছে। আর মহারাষ্ট্রে তো এনসিপি সঙ্গে ছিল।’’ কংগ্রেসকে সিপিএমের ডানহাত হিসেবে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, তখনই বুঝেছিলাম তাই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল করেছিলাম।’’ দিল্লির সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলের উল্লেখ মমতা বলেন, ‘‘এই সব কারণেই দিল্লিতে গোল্লা পেয়েছেন।’’
রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনায় এদিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল কংগ্রেস ও বামেরা। তার জবাবে বিরোধীদের নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী তৃণমূলের বিরুদ্ধেই বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার অভিযোগ করেন। ২০০৩ সালে আরএসএস-এর একটি অনুষ্ঠানে মমতার উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, ‘‘সেখানে তো আরএসএস নেতারা আপনাকে দুর্গা বলেছিলেন। আপনিও তাঁদের সঙ্গে আছেন বলেছিলেন।’’ মনোজের অভিযোগ নীতিহীনভাবে বিরোধী দলের বিধায়ক, জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েতের সব স্তরে পদাধিকারীদের তৃণমূলে নিয়ে বিজেপির রাস্তা প্রশস্ত করেছে তৃণমূলই। মনোজের বক্তৃতার সময় সরকারপক্ষের বিধায়কেরা বারবার আপত্তি জানান।
একইভাবে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সমঝোতার অভিযোগ করেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী গৌতম দেব যে ভোট পেয়ে জিতেছিলেন, তা কোথায় গেল! হাবরার বিধায়ক তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ব্যবধান কত ছিল? তাঁর সেই ভোট লোকসভা নির্বাচনে কোথায় গেল?’’ বামেদের বিরুদ্ধে তাদের ভোট বিজেপিতে ‘ট্রান্সফার’ করার যে অভিযোগ তৃণমূল করে এদিন তা নিয়েই পাল্টা জবাবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্র ভবানীপুরেও বিজেপির ভাল ফলের কথা উল্লেখ করেন সুজনবাবু।
বিরোধীদের এই আক্রমণের জবাবে মুখ্যমন্ত্রীও বাম-কংগ্রেসকে তুলোধনা করেছেন। কংগ্রেসকে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তাদের অবস্থার কথা মনে করানোর পাশাপাশি সিপিএমের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের পার্টির বিষয়টি আমরা দেখে নিতে পারব। ভবানীপুরের দায়িত্ব সিপিএমকে কে দিল? নিজেদের চরকায় তেল দিন।’’ বিজেপির সঙ্গে বামেদের সমঝোতার অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি সবাইকে ধরে আপনাদের ধরে না কেন? বোঝাপড়া না থাকলে তা হয়?’’ তারপরই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কথা টেনে মমতা বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুরের সারদা গার্ডেনে জমি কে নিয়েছিল? কারা ছিল সে সময়? এ সব বলব?’’