আবারও মুখ্যমন্ত্রীর সভায় দেখা গেল চাকরিপ্রার্থীদের। ছবি: ফেসবুক।
বর্ধমান শহরের গোদার মাঠের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল আসানসোলে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি অনুষ্ঠানে চাকরির দাবি করে প্ল্যাকার্ড দেখিয়েছিলেন টেট-উর্ত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা। মঙ্গলবারেও তৃণমূলের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন কয়েক জন এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থী।
সোমবার চাকরিপ্রার্থীদের ডেকে আশ্বস্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মঙ্গলবার দৃশ্যতই তাঁকে ক্ষুব্ধ বলে মনে হয়েছে। ওই সভা থেকে প্রতিবাদীদের সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। আর মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ১৭ হাজার শিক্ষকের চাকরি তিনি তৈরি রেখেছেন। কিন্তু ওই চাকরিপ্রার্থীদেরই কেউ কেউ আদালতে মামলা করেছেন। তার জন্যই নিয়োগপর্ব নিয়ে এত জটিলতা। চাকরিপ্রার্থীদের মমতা এ-ও বলেন, ‘‘আদালতের অনুমতি আনুন! চাকরি রেডি (তৈরি) আছে।’’
মঙ্গলবার আসানসোলে মমতার দেড় ঘণ্টার সভার মাঝামাঝি কয়েক জন মহিলাকে মঞ্চের কাছাকাছি জায়গা থেকে পোস্টার উঁচিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দেখা যায়। দেখামাত্রই মমতা মঞ্চ থেকে তাঁদের বসতে নির্দেশ দেন। এবং সরাসরি অভিযোগ করেন, বিজেপি এবং সিপিএম তাঁদের পাঠিয়েছে! চাকরিপ্রার্থীরা জানান, তাঁরা শুধু কাজের কথা বলতেই এসেছেন। যার উত্তরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি তো কোর্টের অর্ডারই (নির্দেশ) মানব ভাই! আপনারা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলুন। ১৭ হাজার চাকরি রেডি (তৈরি)। পাঁচ হাজার জন নিজেদের ‘ডিপ্রাইভড’ (বঞ্চিত) মনে করেছিলেন, তাঁদের জন্যও চাকরির ব্যবস্থা করছি। কিন্তু আমি তো কোর্টে যাইনি। আপনারা গিয়েছেন!’’
সেখানেই না থেমে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘বিকাশবাবুদের (বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। আইনজীবী, সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র) গিয়ে বলুন, আপনার তো টাকার অভাব নেই। আপনি আমাদের চাকরি বন্ধ করেছেন, আপনিই ব্যবস্থা করে দিন।’’
প্রসঙ্গত, প্রাথমিক এবং এসএসসি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা চলছে নিম্ন আদালত এবং কলকাতা হাই কোর্টে। হাই কোর্টের নির্দেশে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তা নিয়েও মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যে সরকারি চাকরি দিই, সেখান থেকে কাউকে তাড়িয়ে দিই না। আদালত যদি নির্দেশ দেয়, যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদেরও ফেরাতে পারি।’’
এর পরে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় মামলাকারীদের কৌঁসুলি বিকাশরঞ্জন ও অন্য আইনজীবীদের কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি আমার সহমর্মিতা আছে। বিকাশ রাজনীতি করবেন। পালিয়ে যাবেন। বিজেপি রাজনীতি করবে। পালিয়ে যাবে। কিন্তু আমি ছেলেমেয়েদের চাকরি নিয়ে রাজনীতি করব না।’’