Mamata Banerjee

১০১ জ্বর নিয়ে হাওড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা, মমতা বললেন, টেম্পারেচার নেমে গেল মানুষের কাছে আসায়

১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার বকেয়া কেন্দ্রের থেকে আদায়ের আন্দোলন জারি থাকবে বলেও বুধবার আবার জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই বলেন, ‘‘আমার জন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, আমার মৃত্যুও হবে আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৯
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।

শুরুতে বলেছিলেন, বেশি ক্ষণ কথা বলবেন না। কারণ, তাঁর শরীরটা খারাপ। ঠান্ডা লেগেছে, সঙ্গে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি জ্বর নিয়েই এসেছেন জানিয়ে কথা বলতে শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কথা শুরুর পরে টানা ৩৩ মিনিট বললেন। কথার শেষে জানালেন, মানুষের মাঝে এসে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তাঁর এখন জ্বর ছেড়ে গিয়েছে। বক্তৃতার শেষ পর্বে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর শরীর আগের চেয়ে ভাল। মমতা বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে এসে জ্বর কমে গিয়েছে, ভাল হয়ে গিয়েছি।’’

Advertisement

বুধবার হাওড়া জেলার একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাঁতরাগাছি বাস টার্মিনাসের সেই সভায় বক্তৃতার শুরতেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জ্বর নিয়েই কথা বলছেন। তবে এ কথাও জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার রাজ্য বাজেট রয়েছে, তার আগে এক দিনেই ঠিক হয়ে যাবেন। এ দিন হাওড়া জেলা জুড়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন মমতা। যার মধ্যে রয়েছে জল এবং সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, নতুন দমকল ভবন নির্মাণ, ৩টি বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন তৈরি, শিবপুর স্নানঘাটের সৌন্দর্যায়ন, হুগলি এবং রূপনারায়ণ নদীর পারের সৌন্দর্যায়ন, হাওড়া জেলা হাসপাতালে সিসিইউ শয্যা, আমতা গ্রামীণ হাসপাতালের ২৪০টি নতুন শয্যা উদ্বোধন। এ ছাড়া ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, ডায়মন্ড হারবার এবং শিলিগুড়িতে কম ভাড়ায় থাকার জায়গা, বসিরহাট এবং সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নাইট শেল্টার।

এই সব প্রকল্প সম্পর্কে বলার মধ্যেই কেন্দ্রকে আক্রমণও করেন মমতা। উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনা এবং তাঁর রাজনৈতিক সংগ্রামের কথা। মমতা বলেন, ‘‘আমি জমিদার নই, জোতদার নই। আমি পাহারাদার। আমি গুলির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছি। আমার সারা শরীরে চোট, তবু কাজ করা থামাইনি।’’ এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের কাছে এক লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকা পায় বাংলা। তবু ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করছে রাজ্য।’’ তবে বকেয়া টাকা আদায়ে আন্দোলন জারি থাকবে বলে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমার জন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, আমার মৃত্যুও হবে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই। আমার নামই আন্দোলন, সংগ্রাম!’’

Advertisement

মমতার কথায় এ দিন উঠে এসেছে সবুজ সাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, বিধবা ভাতা, মানবিক ভাতার কথাও। রাজ্য সরকারকে তিনি সাধারণ মহিলাদের সঙ্গে তুলনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে মহিলারা টাকা জমিয়ে সংসার চালান, আমিও সে ভাবেই রাজ্য চালাই।’’ বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পের কথা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘জমি কেনা, পাইপ, রক্ষণাবেক্ষণ মিলিয়ে ৭৫ শতাংশ খরচ রাজ্য সরকার করে, বাকি ২৫ শতাংশ খরচ দিয়ে কৃতিত্ব নিয়ে যায় কেন্দ্র।’’

মুখ্যমন্ত্রী সাঁতরাগাছিতে বলেন, ‘‘হাওড়াকে এক সময় প্রাচ্যের ম্যানচেস্টার বলা হত। কিন্তু বাম আমলের শেষে সেই বর্ধিষ্ণু হাওড়ার কিছুই অবশিষ্ট ছিল না।’’ তৃণমূল সরকার এসে হাওড়ার অনেক উন্নতি করেছে বলে জানিয়েছেন মমতা। মেডিক্যাল এবং পলিটেকনিক কলেজ, আইটিআই কলেজ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, শিল্পেও নতুন জোয়ার এসেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘এই জেলায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে সাড়ে ৫ হাজার শিল্প কারখানা তৈরি হয়েছে। সেখানে ৬৭ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ভবিষ্যতে তা আরও বাড়বে।’’ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের চাকরির প্রস্তুতির জন্য যোগ্যশ্রী প্রকল্পের পরিকল্পনার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, আপাতত শুধুমাত্র তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতির পড়ুয়াদের জন্য ৫১টি সেন্টার তৈরি করা হলেও পরে সাধারণ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্যও ৫০টি সেন্টার তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement