মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম
কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম গ্রেফতার হওয়ায় করোনা মোকাবিলা ব্যাহত হচ্ছে বলে আক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার মেয়র, যে সারাদিন কাজ করে বেড়ায়, সারাক্ষণ ফিল্ডে থেকে কাজ করে, সে গ্রেফতার হওয়ায় ৪ দিন ধরে কলকাতায় ভ্যাকসিনের কাজ, পরিষ্কারের কাজ আমরা অন্য ভাবে করছি। কিন্তু এক জনের বিকল্প আর এক জন হয় না।’’ অতিমারির মধ্যেও প্রতিহিংসামূলক রাজনীতি চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মমতা।
করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করতে না পারার আপসোস যে ফিরহাদেরও রয়েছে তা সোমবার রাতেই দেখা গিয়েছে। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের মঞ্জুর করা অন্তর্বর্তীকালীন জামিন রাতে হাই কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পরে তিনি প্রকাশ্যে কেঁদে ফেলেছিলেন। নিজাম প্যালেস থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এরা আমায় করোনা মোকাবিলায় কাজ করতে দিল না।’’
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে হাজির ছিলেন মমতা। সেখানে কথা বলার সুযোগ না মেলায় পরে সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তারই মধ্যে বিচারাধীন বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে চান না জানিয়েও বলেন, ‘‘ববি, সুব্রতদা সবাইকে আটকে রেখেছে। সঠিক বিচার পাবে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এক জন রাজনীতিবিদ এবং সরকারের তরফে বলছি, ববি অনেক কাজ করে। ছেলেটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালেও অংশ নিয়েছে।’’
ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ববির অংশগ্রহণ নিয়ে টুইটারে সরব হয়েছেন তাঁর কন্যা প্রিয়দর্শিনী হাকিম। তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাবা ফিরহাদ হাকিম কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে প্রথম স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। এটা ঝুঁকির হতে পারত বলে সেই সময়ে অনেকে বাবাকে বলেছিলেন। কিন্তু বাবা জানান, আমি এই অতিমারির বিরুদ্ধে লড়তে যা যা সম্ভব সব করতে তৈরি। বাবা এমন এক জন মানুষ যিনি সব সময় নিজের কথা না ভেবে কী করলে অপরের উপকার হবে তা নিয়ে চিন্তা করেন’। এর আগে গত সোমবারও প্রিয়দর্শিনী বলেছিলেন, ‘ভিত্তিহীন ভাবে গ্রেফতার করে আটকে রাখার ফলে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা আরও কিছুটা পিছিয়ে পড়লাম’।
সোমবার ফিরহাদ-সহ ৪ নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতারের পরে নিজাম প্যালেসে গিয়েছিলেন মমতা। বুধবার হাই কোর্টে ওই মামলার শুনানিতে বার বার ওঠে সেই প্রসঙ্গ। বৃহস্পতিবার অবশ্য সেই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। শুধু বলেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয়ে আমি কিছু বলছি না। কিন্তু যা করেছে ওদের সঙ্গে, তার কোনও সীমা পরিসীমা নেই। কোর্টের ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করব না। তবে এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণ।’’