মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং ম্যালের সরকারি অনুষ্ঠান থেকে বুধবার জিটিএ-র প্রধান অনীত থাপাকে সামনে রেখেই পাহাড়ের উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং ঐক্যের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল আগামীতেও পাহাড়ের শাসক দল, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার পাশে থাকবে বলে জানালেন। পাহাড়ে আর ‘নতুন নেতার’ প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে পাহাড়বাসীকে ২০১৭ সালের আন্দোলনের ইতিহাস মনে করান মুখ্যমন্ত্রী। ‘জয় গোর্খা’ ও ‘জয় বাংলা’র ডাক দিয়ে একত্রে এগোনোর আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা চাই, অনীত থাপা দার্জিলিং, কালিম্পঙে এগিয়ে যাক। তৃণমূলের সঙ্গে অনীতদের বোঝাপড়া রয়েছে। তা আগামীতেও থাকবে। পাহাড়ে প্রতি পাঁচ বছর পর পর নতুন নেতা হতে লোকজন আসবেন! তার আর দরকার নেই।”
পাহাড়ে সম্প্রতি নতুন দল বা মঞ্চ গড়া নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, সেখানে হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ডকে সামনে রেখে নতুন প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। অনীত-বিরোধী নানা দলের নেতারা অজয়ের পাশে যাচ্ছেন। তৃণমূলের একাংশও তাঁদের ‘উৎসাহ’ দিচ্ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্যে অনীতের প্রতি আস্থাজ্ঞাপন এবং পাহাড়বাসীকে হিংসার দিনগুলির (২০১৭) কথা মনে করিয়ে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ, মনে করছেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা।
অনীত পরে বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের উপরে ভরসা রেখেছেন, এ জন্য কৃতজ্ঞ। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই আমরা চলব। আমি যত দিন আছি, তত দিন পাহাড়ে অশান্তি হতে দেব না।”
পাহাড়ের উন্নয়নে ২০১১ সালের পর থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, জিটিএকে দেড় হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন লোকসভা ভোটে পরাজয় নিয়ে তাঁর আক্ষেপ, “প্রাক্তন আমলা গোপাল লামাকে ভোটে দাঁড় করিয়েছিলাম। উনি সত্যি কথা বলেন। তাই জিতলেন না।” বিজেপির নাম না করে মমতার কটাক্ষ, “পাহাড়ে টাকার থলি নিয়ে ভোট হল। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সব চলছে।” বিজেপির দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা পাল্টা বলেন, “পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্স নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সার্বিক ভাবে ব্যর্থ। উনি পর্যটক হিসাবে আসেন, আর বিভেদের রাজনীতি করে কলকাতায় চলে যান।”