নীতি আয়োগের বৈঠক নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র।
নীতি আয়োগের বৈঠক নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশে আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তুললেন কিছু বলতে না দিয়ে বসিয়ে রাখার অভিযোগও। সোমবার নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ২৭ মে তিনি নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাবেন। রাজ্যের দাবিদাওয়া আদায় করতেই যে তাঁর দিল্লি-যাত্রা, সে কথা জানিয়ে নিজের ক্ষোভের কথাও প্রকাশ্যে আনেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বৈঠকে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। সবার শেষে বলতে দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সবার শেষে, সূর্যাস্তের পর আমায় বলতে দেবে। ওদের কাছে সূর্যোদয়ের আগে আমার মুখ দেখা যায় না।”
আদ্যক্ষর অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের নাম সব রাজ্যের শেষে থাকে, সে কথা উল্লেখ করেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাকে হয়তো বলতে দেবে সবার শেষে, রাত্রিবেলা, তা আর কী করা যাবে! আমায় বলতে দিতেও চায় না।” মুখ্যমন্ত্রী অতীতেও বহুবার অভিযোগের সুরে জানিয়েছেন, যোজনা কমিশনকে ভেঙে দেওয়ার ফলে একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। যোজনা কমিশনের সঙ্গে যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। সোমবারও নীতি আয়োগ এবং যোজনা কমিশনের তুলনা টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগে যোজনা কমিশন ছিল। আমরা বলতাম। কাজ হত। এখন তো নীতি আয়োগ।” তারপরই তিনি বলেন, “থাক, আর কিছু বলব না, পুরোটাই জ়িরো, জ়িরো, জ়িরো।” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, নীতি আয়োগের বৈঠকে রাজ্যগুলির সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হবে, তা-ও আগে থেকে ঠিক করা থাকে। এই প্রসঙ্গে উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, এ বার ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হবে। পঞ্চায়েত নিয়ে আলোচনা হলে তিনি ১০০ দিনের কাজের বকেয়া অর্থ আটকে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপির বিরুদ্ধে সরকারি বৈঠকে পরোক্ষে প্রচার চালানোর অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বৈঠকের দু’ঘণ্টা আগে থেকে টেলিভিশনে জ্ঞান দেয়, আর বসিয়ে রাখে।” তবে এত কিছুর পরেও যে তিনি এই ধরনের বৈঠকে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হবেন, সে কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। শিয়রে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তৃণমূলের নবজোয়ার যাত্রা কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যের সঙ্গে অসহযোগিতা করার অভিযোগ তুলেছেন। এ-ও জানিয়েছেন যে, কেন্দ্র টাকা আটকে রাখায় ১০০ দিনের কাজ কিংবা গ্রামীণ আবাস যোজনার মতো মূলত গ্রামীণ প্রকল্পগুলিতে প্রাপকদের টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। এই আবহেই এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের মুখোমুখি হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।