পঞ্চায়েতের ফলাফলের ধাক্কা। ব্যাপক রদবদল হয়ে গেল ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলে। রদবদল করলেন খোদ দলনেত্রী। সোমবার সকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বাড়িতেই বৈঠক ডাকেন। ছিলেন দলের মহাসচিব তথা ঝাড়গ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। দুই জেলার অধিকাংশ বিধায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। পাঁচটি ব্লকের সভাপতি বদলে দিয়েছেন মমতা। আরও রদবদল আসন্ন বলে তৃণমূল সূত্রেই জানা যাচ্ছে। এ দিনের বৈঠকে বেশ কয়েকজন বিধায়ককে মমতার তিরস্কারের মুখে পড়তে হয়েছে বলেও খবর।
পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের প্রায় সব প্রান্তই দখলে নিয়েছে তৃণমূল। ব্যতিক্রম শুধু ঝাড়গ্রাম আর পশ্চিম মেদিনীপুর। জেলা পরিষদের দখল তৃণমূল ধরে রাখলেও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে ওই দুই জেলায় বিজেপির কাছে ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে রাজ্যের শাসক দল।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে ঝাড়গ্রাম দেখভালের দায়িত্ব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। খারাপ ফলাফলের জেরে পার্থকে দায়িত্ব থেকে মমতা সরাননি। কিন্তু তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, ঝাড়গ্রামের সংগঠন এ বার থেকে তিনি নিজেই দেখভাল করবেন। সোমবার সকালে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতৃত্বকে নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করে মমতা আরও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন, জঙ্গলমহলে দলের হাল ফেরাতে কতটা বদ্ধপরিকর তিনি।
আরও পড়ুন: ভর্তিতে তোলাবাজি, তোলপাড় হওয়া অভিযোগের মধ্যেই আচমকা আশুতোষে
ঝাড়গ্রাম জেলার পাঁচটি ব্লকে এ দিন দলের নতুন সভাপতি মনোনীত করেছেন দলনেত্রী। জামবনি ব্লকের নতুন সভাপতি হয়েছে নিশীথ মাহাত, সাঁকরাইলের নতুন সভাপতি হয়েছেন সোমনাথ মহাপাত্র। লালগড়ের দায়িত্ব পেয়েছেন শ্যামল মাহাত, ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের দায়িত্ব পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ মাহাত এবং বেলপাহাড়ির সভাপতি করা হয়েছে বুবাই মাহাতকে।
ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর— দুই জেলার সভাপতি পদেই এখন রয়েছেন অজিত মাইতি। তিনি এ দিনের বৈঠকে তো ছিলেনই। ছিলেন মানস ভুঁইয়া, সৌমেন মহাপাত্র, দুর্গেশ মল্লদেব, শ্রীকান্ত মাহাত, চূড়ামণি মাহাত, দুলাল মুর্মু-সহ দুই জেলার গুরুত্বপূর্ণ সব নেতাই।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সে নিয়ে দুই জেলার কোনও নেতাই এ দিন মুখ খুলতে চাননি। তবে সাংগঠনিক ব্যর্থতা এবং উপদলীয় কার্যকলাপ নিয়ে চূড়ামণি মাহাত এবং দুলাল মুর্মুকে দলনেত্রীর প্রবল তিরস্কারের মুখে পড়তে হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
অজিত মাইতির হাত থেকে একটি জেলার দায়িত্ব নিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে ভোটের পরে জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে এ দিনের বৈঠকে জেলা স্তরে কোনও রদবদল মমতা করেননি। তবে মানস ভুঁইয়া এবং সৌমেন মহাপাত্রকে পশ্চিম মেদিনীপুরের সংগঠন দেখভাল করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অজিত মাইতি এখন থেকে মানস এবং সৌমেনের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ চালাবেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়।
সোমবারের বৈঠকে রদবদল মূলত ঝাড়গ্রামেই সীমাবদ্ধ রইল ঠিকই। কিন্তু শাসক দল সূত্রে জানা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরেও শীঘ্রই রদবদল হবে। বেশ কয়েকটি ব্লকের সভাপতি বদল হতে পারে ওই জেলাতেও।