Mamata Banerjee Cabinet

Mamata Banerjee: আমেরিকা সফরে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা, রাজ্যে শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আনাই লক্ষ্য

বণিকসভা আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সকে এই বার্তা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সব কিছু ঠিক থাকলে শীঘ্রই ওই সফরের সূচি চূড়ান্ত করবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২০
Share:

বিনিয়োগ টানাই যে পাখির চোখ মুখ্যমন্ত্রীর ফাইল চিত্র।

বিপুল সংখ্যায় কাজের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে উৎপাদন শিল্পে (কল-কারখানায়) বিনিয়োগ টানাই যে পাখির চোখ, তৃতীয় বারের জন্য সরকারে এসে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিশানা, সামগ্রিক ভাবেই শিল্পে লগ্নি ঘরে আনা। এ বার বিভিন্ন আমেরিকান সংস্থার বিনিয়োগ টানতে ওই দেশে সফরের কথা বিবেচনা করছেন তিনি।

Advertisement

সূত্রের দাবি, শুক্রবার এই বার্তা বণিকসভা আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সকে (অ্যামচ্যাম) দিয়েছে রাজ্য সরকার। সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে, শীঘ্রই ওই সফরের সূচি চূড়ান্ত করবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ দিন চেম্বারের বার্ষিক সভায় পশ্চিমবঙ্গকে পৃথক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই বৈঠকে রাজ্যের তরফে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিষয়ে কথা হয়েছে। বস্তুত, কয়েক হাজার সংস্থা আমেরিকান চেম্বারের সঙ্গে রয়েছে। এ দেশে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত অ্যামচ্যামের আহ্বায়ক।

Advertisement

রাজ্যে আমেরিকান বিনিয়োগ অবশ্য নতুন নয়। বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে বিদেশি তথা আমেরিকান লগ্নি উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে বলে সরকারি সূত্রে দাবি। তথ্য অনুযায়ী, ২০১০-১১ অর্থবর্ষে রাজ্যে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ যেখানে ৯.৫ কোটি ডলার ছিল, সেখানে ২০১৯-২০ সালে তা প্রায় ৬০.৮০ কোটি ডলার। রাজ্যের দাবি, এখন তথ্যপ্রযুক্তি, উৎপাদন শিল্প, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, লজিস্টিক্স-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমেরিকান বিনিয়োগ এবং তার হাত ধরে কর্মসংস্থান বাড়ছে। চালু সংস্থার সম্প্রসারণের পাশাপাশি আমেরিকান মুলুক থেকে নতুন বিনিয়োগ আনতেই রাজ্যের শিল্প প্রতিনিধিদের নিয়ে আমেরিকায় যেতে পারেন মমতা। সরকারের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “রাজ্যে শিল্প (বিশেষত কল-কারখানা) এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে নতুন লগ্নি এবং চালু সংস্থা সম্প্রসারণে উৎসাহ দেওয়াই মুখ্যমন্ত্রীর সফরের লক্ষ্য হতে পারে।”

সরকারের দাবি, গত এক দশকে পরিকাঠামোয় বিপুল বিনিয়োগ করেছে রাজ্য। সড়ক, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ—সব ক্ষেত্রেই শিল্পমুখী সংস্কার হয়েছে। শিল্পের সমস্যা দূর করতে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পৃথক পরামর্শদাতা বোর্ড তৈরি হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক প্রকল্পে। এক কর্তার কথায়, “দশ বছর ধরে বহু আমেরিকান সংস্থা শুধু যে বিনিয়োগ করেছে তা-ই নয়, ব্যবসা সম্প্রসারণও করেছে। তাদের সেই অভিজ্ঞতার ইতিবাচক প্রভাব মুখ্যমন্ত্রীর সফরে পড়তে পারে।”

বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভা ডেটা-নীতি তৈরিতে সিলমোহর দিয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, তথ্যপ্রযুক্তি হাব-এ ডেটা সেন্টারের জন্য ইতিমধ্যেই জমি নিয়েছে জিয়ো, এয়ারটেল, ইনফোসিসের মতো সংস্থা। ফলে এই নতুন নীতি আমেরিকান সংস্থাগুলিকেও আকৃষ্ট করবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা।

সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, আমেরিকান তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা কগনিজ্যান্টে রাজ্যে প্রায় ২০ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে পেপসি তিনটি প্লান্ট করেছে সরকারি শিল্পতালুকে। প্রতি বছর ২০% করে কাজের পরিধি বাড়াচ্ছে তারা। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ১৮ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে। কোকাকোলার একটি নরম পানীয়ও এখন এ রাজ্যে তৈরি হচ্ছে। তাতে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা। অ্যামাজ়ন তাদের সাতটি লজিস্টিক্স কেন্দ্র তৈরি করেছে রাজ্যে। ডিজিটাইজ় করেছে প্রায় ৩২ হাজার ছোট বিক্রেতার কর্মপদ্ধতিকে। সব ক’টি লজিস্টিক্স কেন্দ্র মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে বলে রাজ্যের দাবি। ওয়ালমার্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ফ্লিপকার্টও রাজ্যে তাদের কর্মকাণ্ড বাড়াচ্ছে।

এক সরকারি কর্তার কথায়, “বাংলাকে কেন্দ্র করে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং বাংলাদেশ, নেপালের মতো দেশেও আমেরিকান সংস্থাগুলি কাজ চালাচ্ছে। ফলে ভৌগলিক দিক থেকেও এ রাজ্যের অবস্থান তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement