অভিষেককে ত্রিপুরায় পাঠানোর ভাবনা মমতার। —ফাইল চিত্র।
বাংলায় ভোটপর্ব মিটে গিয়েছে। পরিকল্পনা চলছে ২৪-এর দিল্লি নিয়ে। তার মধ্যেই এ বার ‘সৈন্য-সামন্ত’ নিয়ে ত্রিপুরায় সরাসরি বিজেপি-র বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছে তৃণমূল। সে জন্য দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্রিপুরায় পাঠানোর চিন্তা ভাবনা করছে তারা। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের ২৩ জন কর্মীকে আগরতলার হোটেলে ‘বন্দি’ করে রাখার অভিযোগ বিপ্লব দেবের সরকারের বিরুদ্ধে। তাঁদের ফেরাতে বৃহস্পতিবার স্বয়ং অভিষেক আগরতলা যেতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
বছর দুয়েকের মাথায় ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। বাংলায় তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফেরার পর ত্রিপুরায় জোড়াফুল ফোটানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। তাদের জন্য সমীক্ষা চালাতেই আইপ্যাকের ২৩ সদস্যের একটি দল সেখানে রয়েছে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে রবিবার রাত থেকে তাঁদের হোটেলে ‘বন্দি’ করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাতেই আইপ্যাক কর্মীদের ছাড়িয়ে আনেত উদ্যোগী হয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো বুধবার সকালের বিমানেই আগরতলা যাচ্ছেন ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক এবং ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, বাংলার নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে মমতার সম্পর্ক শুধুমাত্র ‘লেনদেন’-এ আটকে নেই। তাই প্রশান্ত ঢের আগেই আইপ্যাক থেকে অব্যাহতি নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও, তাঁর সংস্থার কর্মীদের সুরক্ষা নিজেদের নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করছেন তৃণমূল নেত্রী। তাই শুধু দলের নেতাদের আগরতলা পাঠানো নয়, একুশের মঞ্চে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে ‘অভিষেক’ ঘটানো অভিষেককে ত্রিপুরায় পাঠাতে আগ্রহী তিনি। তাতে ত্রিপুরার দিকে জাতীয় স্তরের নেতাদের নজর টানা যাবে বলে মনে করছেন মমতা।
দিল্লি সফরে মমতার সঙ্গী হয়েছেন অভিষেক। পাশাপাশি সংসদের বাদল অধিবেশনেও যোগ দেবেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। মঙ্গলবার তাঁর বাংলোতেই দিনভর বিজেপি বিরোধী নেতাদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার সেখান থেকেই অভিষেক আগরতলা রওনা দিতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এখনও এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সব দিক দেখে কর্মসূচি স্থির হবে। তবে ত্রিপুরায় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়েছেন, অভিষেকের আগমনের খবর তাঁদের কানেও পৌঁছেছে। তবে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
আইপ্যাক কর্মীরা ‘বন্দি’ না হলে ত্রিপুরা যাওয়ার কথা ছিল অভিষেকের। তাঁর হাতে আগরতলায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনের কথা রয়েছে। তবে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মমতার নেতৃত্বে বিরোধী জোট গড়ে ওঠার জল্পনা যখন তুঙ্গে, সেই সময়ই অভিষেকের ত্রিপুরা যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেল। তাই সর্বশক্তি দিয়ে সেখানে তৃণমূল সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে বলে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।