বাঁ দিকে, ম্যাটের উপর দাঁড়িয়ে মোদী। ডান দিকে, জল কাদায় মাটিতেই পা মমতার।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরেই জলকাদা ভেঙে একেবারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি। একহাতে ছাতা আর অন্য হাতে মাইক ধরে শুরু করলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে বার্তালাপ। বিরোধীদের ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে এক দিকে যখন উত্তাল সংসদভবন, সেই সময় রাজধানীর রাস্তায় ‘ছাতার রাজনীতি’ টুকুও সেরে ফেললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক সারিতে বসিয়ে সরাসরি তাঁর তুলনা শুরু হয়ে গেল।
মঙ্গলবার দুপুরে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে মমতা যখন বেরোচ্ছেন, বাইরে সেই সময় মুষলধারে বৃষ্টি। সেই অবস্থাতেই মাথা বাঁচিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাংলোয় পৌঁছন মমতা। বাইরে তখন সাংবাদিকদের ভিড়। তাঁদের দেখে বৃষ্টি মাথায় বাংলো থেকে বেরিয়ে আসেন মমতা।
মোদীর সঙ্গে কী কথা হল, তা জানতে যখন উদগ্রীব সাংবাদিকরা, মমতার গলায় তখন অভিভাবকের সুর। কাকভেজা সাংবাদিকদের ঈষৎ ধমক দিয়ে বলেই ফেললেন, ‘‘বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর আসবে কিন্তু। শিগগির ছাতা নিন। ছাতার নীচে দাঁড়ান। একদম ভিজবেন না।’’
জল কাদার মধ্যে একখানা নীল ছাতা ধরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মমতার এই নির্ভেজাল কথাবার্তাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সপ্তাহ খানেক আগে নিজে হাতে ছাতা ধরে সংসদভবনের বাইরে দেখা গিয়েছিল মোদীকেও। তবে টিপ টিপ বৃষ্টিতে মোদীর পায়ের নীচে পুরু সবুজ ম্যাট পাতা থাকলেও, মমতা পা ছিল মাটিতেই। মোদীর বক্তৃতার জন্য সুসজ্জিত ডায়াস বসানো হলেও, এক হাতে ছাতা এবং অন্য হাতে মাইক ধরেই একনাগাড়ে কথা চালিয়ে যান মমতা।
এর আগে নিজে হাতে ছাতা ধরা নিয়ে নেটমাধ্যমে মোদীকে নানা উপমায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপি-র নেতা-মন্ত্রীরা। মা-মাটি-মানুষ স্লোগান যাদের ভিত্তি, সেই তৃণমূল যদিও এ নিয়ে কোনও প্রচারে নামেনি। তবে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে ২০২৪-এ গোটা দেশের মাথার উপর ছাতা মেলে ধরবেন মমতা। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘বৃষ্টিতে ছাতা। নিজের হাতে। ২০২৪-এ এই ছাতা ধরবেন দেশবাসীর মাথায়। জনবিরোধী নীতির কালো মেঘের দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে। এটা ট্রেলার। পিকচার অভি বাকি হ্যায়।’