এ বারেও সম্পাদক হয়েছেন লালগড় আন্দোলনের নেতা ছত্রধর মাহাত। সম্পাদক হয়েছেন মালদার নীহার ঘোষ, আলিপুরদুয়ারের সৌরভ চক্রবর্তী। কলকাতা থেকে সম্পাদক হয়েছেন স্বরূপ বিশ্বাস, আশিস চক্রবর্তী, অলোক দাস।
নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
দলের জাতীয় কর্মসমিতির মতোই রাজ্য কমিটিতে পুরনো নেতাদের আধিক্য বহাল রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণার পাশাপাশি জেলা স্তরে তিনি যে ক’টি রদবদল করেছেন তাতেও সেই ছাপ স্পষ্ট করেছেন তৃণমূলনেত্রী নিজেই।
রাজ্যে তৃতীয় বার সরকার গঠনের পরে তৃণমূলের নজরে এখন জাতীয় রাজনীতি। সেই লক্ষ্যে এগোতে তিনি যে রাজ্যকে মজবুত রাখতে চান মঙ্গলবার নতুন করে রাজ্য কমিটি ঘোষণার সময়ও সে কথা উল্লেখ করেছেন মমতা। আর পুরনো পদাধিকারীদের প্রায় সকলকে পুরনো জায়গায় রেখে কমিটি গড়ে এ দিন তাঁর আস্থার বার্তা দিয়েছেন মমতা। দলের দুই শীর্ষ পদ রাজ্য সভাপতি ও মহাসচিব হিসেবে রাখা হয়েছে সুব্রত বক্সী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই।
তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে যাঁরা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তাঁরা সকলেই সেই পদে রয়েছেন। যেমন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস,শশী পাঁজা। সেই সঙ্গে অবশ্য কয়েকজন নতুন মুখও এ বার এই সারিতে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন পার্থ ভৌমিক, গৌতম দাস, কৃষ্ণ কল্যাণীর মতো নতুনরাও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন দলিত সাহিত্যিক তথা বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। দলের প্রাক্তন যুব সভাপতি সঞ্জয় বক্সীকে মমতা এ বার সাধারণ সম্পাদক ফিরিয়ে এনেছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের চেয়ারপার্সন করা হয়েছে সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি জয়া দত্তকে। পুরনোদের আধিক্য থাকলেও নতুন মুখও রয়েছে বিভিন্ন স্তরে।
এ বারেও সম্পাদক হয়েছেন লালগড় আন্দোলনের নেতা ছত্রধর মাহাত। সম্পাদক হয়েছেন মালদার নীহার ঘোষ, আলিপুরদুয়ারের সৌরভ চক্রবর্তী। কলকাতা থেকে সম্পাদক হয়েছেন স্বরূপ বিশ্বাস, আশিস চক্রবর্তী, অলোক দাস। হুগলির দিলীপ যাদব। দলের সাংস্কৃতিক কমিটির দায়িত্ব ফের পেয়েছেন পরিচালক- বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী।
এ দিনের সভায় তৃণমূলের পাঁচটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে বদল করেছেন মমতা। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরতে চাওয়ায় উত্তর কলকাতায় সভাপতি পদে তাপস রায়ের জায়গায় আনা হয়েছে তাঁকে। তাপস এ বার রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি হয়েছেন। বনগাঁয় কিছু অভিযোগে আলোরানী সরকারকে সরিয়ে গোপাল শেঠকে সভাপতি করা হয়েছে। কৃষ্ণনগরে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে দলের অন্দরে টানাপড়েন ছিলই। তাঁকে সরিয়ে সভাপতি করা হয়েছে দীর্ঘদিনের বিধায়ক কল্লোন খাঁকে। একই ভাবে কোচবিহারে সভাপতি গিরীন্দ্র বর্মণকে চেয়ারম্যান করে তাঁর জায়গায় সভাপতি পদে ফিরিয়ে আনা হয়েছে পার্থপ্রতীম রায়কে। তমলুকের সভাপতি করা হয়েছে তুষার মণ্ডলকে।
এ দিনের সভা থেকেই লম্বা জনসংযোগের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তৃণমূলনেত্রী। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির কায়দায় এই পর্বে দলের নেতাকর্মীরা গ্রামে গিয়ে ফের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সময় কাটাবেন। ৫ মে থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত চলবে প্রথম দফা। মমতার ঘোষণা, ‘‘একুশে জুলাইয়ের শহিদ স্মরণের পরে দ্বিতীয় দফার কর্মসুচি চলবে পুজো পর্যন্ত। তারপর ফের তৃতীয় দফা।’’ এ দিন মমতার উপস্থিতিতেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তৃণমূলে এসেছেন তন্ময় ঘোষ। জয়প্রকাশকে দলের রাজ্য সহ সভাপতি এবং তন্ময়কে সাধারণ সম্পাদক করেছেন মমতা।