কৃষ্ণনগরের কর্মিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: টুইটার
পুরভোটকে টার্গেট করে কোমর বাঁধছে তৃণমূল। দলীয় কর্মীদের কী বলতে হবে বা কী করতে হবে, বুধবার কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে তারই ক্লাস নিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি নিয়ে দলের সুর ঠিক কোন পর্দায় হবে, তা-ও বেঁধে দিলেন দলনেত্রী।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন যদি ফাইনাল হয়, তবে নিঃসন্দেহে সেমি ফাইনাল হল পুরভোট। সিএএ বা এনআরসি-র বিরুদ্ধে আন্দোলনের আঁচে তপ্ত গোটা দেশ। এই মুহূর্তে দেশ জুড়েই যে কোনও নির্বাচনে ইস্যু হয়ে উঠেছে সিএএ, এনআরসি ও এনপিআর। এ দিন কৃষ্ণননগরে গিয়ে মমতা জোর দিলেন সেখানেই। সংসদে বিল আনার ক্ষেত্রে বিজেপি কেমন তাড়াহুড়ো করছে তা বোঝাতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘পার্লামেন্টে আগে ৭২ ঘণ্টা সময় দিত। কিন্তু এখন সেকেন্ডে সেকেন্ডে বিল আসে। রাতে বিল পাঠিয়ে বলে, সকালে আলোচনা হবে। মোটেই সময় দেওয়া হয় না। আর বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে বলে বিলে যা নয় তাই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।’’ এর পর অবশ্য দলীয় সাংসদদের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘সংসদে তৃণমূল সাংসদরা খুব ভাল কাজ করছেন।’’
সিএএ ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই, দেশ জুড়ে এনআরসি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও, গত বছর ডিসেম্বরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, সারা দেশেই কার্যকর হবে এনআরসি এবং সিএএ। মঙ্গলবার, সেই একই কথা সংসদে বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই।
আরও পড়ুন: হাত টেনে ধরে বলল, গাড়িতে তুলে নে, এখনও আতঙ্কে ট্যাংরার সেই বধূ
এই সূত্রেই মঞ্চে একটি চিঠি পেশ করে দেখিয়ে তৃণমূল নেত্রী দাবি করেনএনপিআর সংক্রান্ত ওই চিঠিটি গত ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছিলএনপিআর হচ্ছে এনআরসি-র প্রথম ধাপ।এর পরই মমতা প্রশ্ন করেছেনতা হলে আমরা কেন এনপিআর করতে বলবআমাদের সরকার নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনপিআর হবে না।সাবধান করে দেওয়ার সুরে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেনবিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের অনেক কর্মচারী আছে। তারা যদি রাজ্য সরকারের নাম করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য চায় তা হলে আপনারা দেবেন না। ওদের বিশ্বাস করবেন না।
আরও পড়ুন: নির্ভয়া: দণ্ডিতরা আরও এক সপ্তাহ সময় পেল দিল্লি হাইকোর্টে
সিএএ, এনআরসি বা অন্যান্য ইস্যুতে দলের অবস্থান কী, রাজ্য সরকারের কোন প্রকল্প কী অবস্থায় রয়েছে — কর্মিসভায় তুলে ধরা এ সব নানা তথ্য কর্মীদের লিখেও নিতে বলেন মমতা। এর পরই নদিয়া জেলার তৃণমূল পর্যবেক্ষককে নির্দেশ দেন কর্মীদের নিয়ে দলের ক্লাস করাতে। প্রশিক্ষণের পর বাড়ি বাড়ি প্রচারের নির্দেশও দিয়েছেন দলনেত্রী। কর্মীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘চোখ কান খোলা রাখুন। জনগণের চোখ দিয়ে দেখুন।’’