(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অখিল গিরি। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর সফরে যাচ্ছেন। তার আগে সোমবার বিধানসভায় ওই জেলার বিধায়কদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বন দফতরের এক মহিলা আধিকারিককে বেনজির আক্রমণ করে মন্ত্রিত্ব খোয়ানো অখিল কয়েক মাস ধরেই জেলায় দলের অন্দরে খানিক ‘কোণঠাসা’। তাঁকে দলনেত্রী মমতা নিজে দায়িত্ব দেওয়ায় বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
নবান্ন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দিঘা যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্দিরে ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। ১১ ডিসেম্বর, বুধবার সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা আগামী বৃহস্পতিবার।
শুধু প্রশাসনিক কাজ নয়, তৃণমূল সূত্রে খবর, দিঘা সফরে গিয়ে জেলায় দলের সাংগঠনিক বিষয়েও খোঁজখবর নিতে পারেন মমতা। সোমবারই সে বিষয়ে জেলার বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর একপ্রস্ত কথা হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এলাকার কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন রয়েছে। এ বার সেই ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই সমবায় ভোটে দলীয় প্রার্থীদের জেতাতে দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন দলনেত্রী। নির্বাচনে জিততে অখিলকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে জেলার নেতাদের মমতার স্পষ্ট নির্দেশ, কাঁথি সমবায় ভোট যে কোনও মূল্যে জিততেই হবে।
চলতি বছরের অগস্টে এক মহিলা বন আধিকারিককে ‘কু-কথা’ বলে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন অখিল। তাঁকে মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। অখিলের ‘ডানা ছাঁটা’ যাওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল, এর পরে কে হবেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলার ‘মুখ’? আলোচনায় উঠে এসেছিল জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের নাম, যিনি আবার জেলায় ‘অখিল-বিরোধী’ বলে পরিচিত। গত জুন মাসে লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পর উত্তমের প্রশংসাও করেছিলেন মমতা। কিন্তু তৃণমূল সূত্রে খবর, সম্প্রতি ফের অখিলের গুরুত্ব বাড়তে শুরু করেছে দলে। মন্দারমণিতে বেআইনি হোটেল নিয়ে বিতর্কের আবহে তাঁকে নবান্নে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন অখিল। এ বার অখিলকে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের ভোট জেতানোর জন্য বিশেষ দায়িত্বও দিলেন দলনেত্রী। যদিও অনেকে আবার একে জেলা তৃণমূলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা বলেই মনে করছেন।