নবান্নের কন্ট্রোল রুমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: মুখ্যমন্ত্রীর ফেসবুক পেজ থেকে সম্প্রচারিত লাইভ ভিডিয়ো।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র গতিবিধি নজরে রাখতে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকেই কন্ট্রোল রুমে রয়েছেন তিনি। নজর রেখেছেন জায়ান্ট স্ক্রিনে। কন্ট্রোল রুমে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সারা রাত নবান্নেই কাটাবেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের জীবন হল সবচেয়ে দামি। মানুষের জীবন রক্ষা করতে হবে। স্কুলগুলি ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই কারণেই। আমি আজ রাতে নবান্নেই থাকব। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সকলে কাজ করবেন।’’
নবান্ন সূত্রে খবর, শুধু কন্ট্রোল রুমে থাকাই নয়, নিজের দফতরের কাজও করবেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজের দফতরে গিয়ে যথাযথ জায়গায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ পৌঁছে দেবেন। তার পর আবার ফিরে আসবেন কন্ট্রোল রুমে। সব কাজ যাতে তাঁর সঙ্গে সমন্বয় রেখেই করা হয়, সে ব্যাপারে প্রশাসনিক কর্তাদের স্পষ্ট নির্দেশও দিয়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’। ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারের মাঝে ঘূর্ণিঝড়ের ‘ল্যান্ডফল’ হতে পারে। ‘ডেনা’র সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল সংলগ্ন এলাকায়। ওই দুই জেলায় আলাদা করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রীকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই মন্ত্রীরা হলেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না এবং সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। এই পাঁচ জনকে রাজ্যের পৃথক পাঁচটি জায়গায় পাঠিয়ে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বলেছেন মমতা।
নবান্ন সূত্রে খবর, সেচমন্ত্রী মানসকে মেদিনীপুরে থেকে ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতির উপর নজরদারি করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী বিরবাহাকে ঝাড়গ্রামে থেকে নজরদারি করতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব পাশকুড়া পূর্বের বিধায়ক হলেও, তাঁকে দেখতে বলা হয়েছে দিঘার সামুদ্রিক এলাকা। দায়িত্ব পাওয়ার পরেই কাজও শুরু করে দিয়েছেন মৎস্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পর মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র সাগরদ্বীপে থেকেই গোটা সুন্দরবনের ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে শুরু করেছেন। সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা এলাকায় নজরদারি করতে সচিব পর্যায়ের আধিকারিক মণীশ জৈনকেও পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নেও হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। নবান্নের হেল্পলাইন নম্বর (০৩৩) ২২১৪৩৫২৬ এবং ১০৭০। হেল্পলাইন নম্বরে কেউ যাতে অকারণে ফোন না করেন, সেই অনুরোধও করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেবলমাত্র সঠিক তথ্যই হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে জানানোর জন্য রাজ্যবাসীকে অনুরোধ মমতার।