এসএসকেএম-এ ঢুকছেন রুজিরা। —নিজস্ব চিত্র।
‘শান্তিনিকেতন’-এ তাঁর বাড়িতে সিবিআই আসছে শুনে সকালেই পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার আহত মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির হলেন এসএসকেএম-এ। শুক্রবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে হাজির হন অভিষেক-জায়া। সেখানে পিসিশাশুড়ির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন চিকিৎসকদের কাছ থেকে। তবে হাসপাতাল চত্বরে সংবাদমাধ্যমকে আগাগোড়া এগিয়েই চলেন রুজিরা।
বুধবার নন্দীগ্রামে দুর্ঘটনার শিকার হন তৃণমূলনেত্রী। ওই দিন রাতেই গ্রিন করিডরে এসএসকেএম-এ আনা হয় তাঁকে। মমতাকে নিয়ে গাড়ি এসে পৌঁছনোর আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিষেক। তার পর থেকে ঘর আর হাসপাতালই করছেন তিনি। পায়ে প্লাস্টার বাঁধা অবস্থায় মমতার ছবিও তিনিই প্রথম সামনে আনেন নেটমাধ্যমে। তবে সংবাদমাধ্যম থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই চলছেন তিনি।
কয়লা কাণ্ডে স্ত্রী রুজিরাকে সিবিআই জেরা করার পর থেকে শুধু সংবাদমাধ্যমেই নয়, রাজনৈতিক সভা-অনুষ্ঠানও অনেকটাই কম দেখা যাচ্ছে অভিষেককে। তৃণমূলের তরফে এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া না হলেও, এ নিয়ে নানা তত্ত্ব উঠে আসছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, নীলবাড়ির লড়াইয়ে শুরু থেকেই বিজেপি-র নিশানায় অভিষেক। রাজ্যবাসীর তুলনায় ‘ভাইপো’কেই মমতা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে বার বার অভিযোগ উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির থেকে।
তা নিয়ে একাধিক সভায় কড়া ভাষাতেই বিজেপি-কে পাল্টা জবাব দিয়ে আসছিলেন অভিষেক। কিন্তু ‘শান্তিকেতন’-এ সিবিআই ঢোকার পরেই তাতে ছেদ পড়ে। কয়লা-কাণ্ডে সিবিআইয়ের খাতায় রুজিরার নাম উঠে এলে, আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়ায় বিজেপি। রুজিরার নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এর পরই গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অভিষেক এবং রুজিরার বাড়ি ‘শান্তিনিকেতন’-এ হাজির হন সিবিআই আধিকারিকরা। প্রায় সওয়া ১ ঘণ্টা তাঁকে জেরা করা হয়। তবে সিবিআই পৌঁছনোর আগেই নবান্ন যাওয়ার পথে সেখানে হাজির হন মমতা। খানিক ক্ষণ সেখানে থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। সেই সময় হাত ধরে গাড়ি পর্যন্ত তাঁকে এগিয়ে দেন অভিষেক-কন্যা।
শুধু রুজিরাই নন, কয়লা-কাণ্ডে তাঁর বোন মেনকা গম্ভীরকেও ইতিমধ্যে জেরা করেছে সিবিআই। তল্লাশি চালানো হয় পঞ্চসায়রে তাঁর আবাসনেও। শুক্রবার আবার মেনকার স্বামী অঙ্কুশ অরোরাকেও সমন পাঠিয়েছে সিবিআই। কয়লা-কাণ্ডে ১৫ মার্চ তাঁকে জেরার জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে।