নির্বাচন কমিশনে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। নিজস্ব চিত্র।
বুধবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনায় বড়সড় ‘ষড়যন্ত্র’-র হাত দেখছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই শুক্রবার দুপুরে দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দফতরে অভিযোগ জানাতে পাঠানো হচ্ছে ৬ সাংসদের এক প্রতিনিধি দল। নির্বাচন কমিশনের কাছে কিছু 'প্রমাণ' তুলে দেবেন তাঁরা। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও যুব মোর্চার নেতা সৌমিত্র খাঁ-র বক্তব্যকেই তৃণমূল ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করবে। বৃহস্পতিবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে দমদমের সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ করেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিগেড সমাবেশে মন্তব্য করেছিলেন, ‘ভবানীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্কুটার যদি নন্দীগ্রামে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনায় পড়ে, তবে তার দায় বিজেপি নেবে না’। আর প্রধানমন্ত্রী এমন বক্তৃতার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটল।’’ এখানেই ‘ষড়যন্ত্র’-এর গন্ধ পাচ্ছে তৃণমূল।
শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, সৌগতবাবু দাবি করেছেন, ‘‘বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁও বলেছিলেন, ‘১০ তারিখের পর কী হবে দেখতে পাবেন’। ঠিক ১০ তারিখেই মুখ্যমন্ত্রীর ওপর এমন হামলার ঘটনা ঘটল।’’ তাই মোদী, দিলীপ ও সৌমিত্রর বক্তৃতার ফুটেজ শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে জমা দেবেন তৃণমূল সাংসদরা। ইতিমধ্যে সেই সব ফুটেজ জোগাড় করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটায় দিল্লির মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে যাবেন সৌগত, বারাসাতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, জয়নগরের প্রতিমা মণ্ডল, বীরভূমের অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের মতো নেতা। বিজেপি নেতাদের এমন ‘উস্কানিমূলক’ বক্তব্যের জেরেই যে এমন ঘটনা ঘটেছে, এমনটাই দাবি করবেন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা।
এছাড়াও, রাজ্য প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের আওতায় আসার পর সরকারি স্তরে যে সমস্ত রদবদল হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি দেওয়া হবে কমিশনে। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় কমিশন পরিচালিত প্রশাসন যথেষ্ট ‘উদাসীনতা’ ছিল বলেই তুলে ধরা হবে বলে সূত্রের খবর। কমিশনের রাজ্য পুলিশের ডিজি বদলের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যে মুখ্যমন্ত্রী ‘আক্রান্ত’ হলেন, সে কথাও জানাবেন তৃণমূল সাংসদরা। প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন রাজ্য প্রশাসনের দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই সংঘাত শুরু হয়েছে সরকারি দল তৃণমূলের সঙ্গে। সেই সংঘাত যে আগামী দু মাস চলবে সে বিষয়ে নিশ্চিত রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা।