প্রতীকী ছবি।
মরুরাজ্য রাজস্থানের থেকেও এ বার গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষণ-ঘাটতি কয়েক গুণ বেশি। বৃষ্টির অভাবে রাজ্যে খারিফ চাষ প্রায় থমকে গিয়েছে। ধান রোয়ার জন্য ন্যূনতম যে-পরিমাণ জলের দরকার, অনেক জেলায় তার চেয়ে কম জল রয়েছে বলে কৃষি দফতরের খবর। এই অবস্থায় অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টি না-হলে চাষিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না-হন, সেই জন্য রাজ্য জুড়ে শস্য বিমা যোজনায় জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কৃষি দফতর।
মঙ্গলবার নবান্নে সব জেলার কৃষি আধিকারিক এবং রাজ্যের কৃষিকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক বসেছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, কৃষিসচিব এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্তা। সেই বৈঠকেই শস্য বিমায় চাষিদের নাম বেশি করে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী আশিসবাবু বলেন, ‘‘৫ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে বৃষ্টি হয়েছে ৬২৪.৪ মিলিমিটার। যা গত বছরের এই সময়ের বর্ষণের প্রায় অর্ধেক। বৃষ্টির ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। আমরা চাষিদের জল দিতে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন জলাধার থেকে জল দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’’
কৃষি দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে নবান্নে বৃষ্টির যে-হিসেব এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, হুগলিতে ৬৪, নদিয়ায় ৫৬, পূর্ব বর্ধমানে ৫০, পূর্ব মেদিনীপুরে ৫৮, হাওড়া ৫১, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৩, দক্ষিন ২৪ পরগনায় ৫৩ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলা শস্য বিমা যোজনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হচ্ছে। চাষিদের নাম নথিভুক্তির শেষ দিন ধার্য হয়েছে ৩১ অগস্ট। শস্য বিমার পুরো টাকাই দেয় রাজ্য সরকার। চাষে ক্ষতি হলে চাষিরা যাতে শস্য বিমার টাকা পান, সেই জন্যই বেশি সংখ্যায় নাম নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কৃষকবন্ধু প্রকল্প নিয়েও। ওই প্রকল্পে ৩৭ লক্ষ ৭১ হাজারের কিছু বেশি চাষির নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। ৩১ লক্ষ ৪৬ হাজারের মতো চেক দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ওই প্রকল্পে কৃষকেরা এক একরের বেশি জমি থাকলে দু’বারে পাঁচ হাজার করে টাকা পাবেন। এক কাঠা জমি থাকলে পাবেন ২০০০ টাকা। কোনও কৃষক মারা গেলে দু’লক্ষ টাকা দেওয়া হবে তাঁর পরিবারকে। বৃষ্টির ঘাটতি চলায় এই সব বিষয়কেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে কৃষিকর্তাদের।