Mamata Banerjee

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে মিথ্যা আর অপপ্রচার: মুখ্যমন্ত্রী

সন্দেশখালির ঘটনার পরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই ইডি-র উপরে চাপ বাড়ানোরও কৌশল নিয়েছে শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৪২
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত সন্তোষজনকই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুলপড়ুয়াদের এক অনুষ্ঠানে সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টায় ইচ্ছা করে ‘অসত্য’ তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, এ দিনই রাজ্যে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েই চড়া সুরে আক্রমণ করেছেন শাসক পক্ষকে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। এখানে জঙ্গল-রাজ চলছে। তবে বেশি দিন এটা চলবে না। মানুষ জাগবে এবং এই রাজ্যে পরিবর্তন হবেই।’’

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘অনেকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অনেক কুকথা বলে। মিথ্যা এবং অপপ্রচার করে। আমাকে কেউ গালি দিক, গায়ে লাগবে না। কিন্তু বাংলাকে গালাগালি দিলে বা নিচু করতে চাইলে আপত্তি রয়েছে।’’ মমতার সংযোজন, ‘‘দেশের মধ্যে শ্রীরামপুর থানা সেরা থানা হিসেবে ঘোষণা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ভাল না হলে এই জায়গাটা কী করে হবে! কলকাতা নিরাপদতম জায়গা হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। কী করে হল!’’

Advertisement

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিক, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং সাংবাদিকদের উপরে দুষ্কৃতীদের মারধরের ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ৭২ ঘণ্টা। তা নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ মহল এখনও নিরুত্তর। মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানও বেপাত্তা। তবে সেই ঘটনার কোনও আঁচ এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে ছিল না।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘‘আমি পাল্টা প্রশ্ন করতে চাই, ২০২১ সালের ২ মে’র পর থেকে অনেকগুলো রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বাদে আর একটা রাজ্য দেখান তো যেখানে ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস হয়েছে! পশ্চিমবঙ্গে শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫৫ জন মানুষ খুন হয়েছেন।” সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কেমন, সকলে দেখতেই পাচ্ছে। বগটুই বা সন্দেশখালির থানা যে পুরস্কার পায়নি, এটাই বড় ব্যাপার!’’

সন্দেশখালির ঘটনার পরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই ইডি-র উপরে চাপ বাড়ানোরও কৌশল নিয়েছে শাসক দল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সোমবার অভিযোগ করেছেন, ‘‘বিজেপির প্ররোচনা ও উত্তেজনা তৈরির রাজনীতির পরিণাম সে দিনের সেই ঘটনা। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। কিন্তু সে দিনের তদন্তকারী আধিকারিকদের মধ্যে অন্যতম ইডি-র সহকারী অধিকর্তা রাজ কুমার রাম। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে সিবিআই।” কুণালের প্রশ্ন, “দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত আধিকারিক কী করে তদন্তকারী দলে আছেন? কী করে দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে বাঁশ নিয়ে তালা ভাঙছেন?’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পাল্টা বলেন, “সিবিআই কী অভিযোগ করেছে, সেটা আলাদা বিষয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের বহু নেতার নামে সিবিআইয়ের অভিযোগ আছে। তা হলে বাংলার মানুষ তাঁদের পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিক!”

কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশনের এ দিনই উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে ওই ডিভিশনের জন্য পৃথক চন্দনেশ্বর, উত্তর কাশীপুর এবং পোলেরহাট থানার উদ্বোধন হয়েছে। ভাঙড় ডিভিশনের জন্য পৃথক ট্রাফিক গার্ডও চালু করা হয়েছে এ দিন। মমতা বলেন, ‘‘ভাঙড় নতুন ডিভিশন হল কলকাতা পুলিশের অধীনে। খেয়াদা-১ এবং ২ এলাকাকেও এই ডিভিশনের অধীনে নিতে হবে। অনেকে নানা রকম কাজকর্ম করছে। দ্রুত এই পদক্ষেপ করতে হবে, যাতে আর কেউ সেই সুযোগ না পায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement