বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
গভীর রাত পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতারা থানায় কেন? পুলিশের সঙ্গে কীসের আড্ডা তাঁদের?
পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে এই প্রশ্ন তুলে পুলিশের কাজকর্মে ফের অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার জেলার পর্যালোচনা বৈঠকে একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি এলাকায় ‘গুন্ডা কার্যকলাপ’ নিয়েও পুলিশ কর্তাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতেই পুলিশের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। কাটোয়া থানার ওসি বিকাশ দত্তের কাছে জানতে চান, তিনি কতদিন এই থানায় এসেছেন। জবাবে বিকাশবাবু জানান দেড় মাস। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘আপনার অফিসে কী রাত ১২টা রাজনৈতিক দলের লোকেরা বসে আড্ডা মারে?’’ বিকাশবাবু পরে অবশ্য বলেন, ‘‘আমার সময় এ রকম কিছু হয়নি। আগে হয়ে থাকতে পারে।’’
পুলিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগিয়ে বহু জায়গায় রাজনৈতিক নেতারা প্রভাবশালী হয়ে উঠছেন, এই অভিযোগ নতুন নয়। শুধু তাই নয়, এই সূত্রেই বিভিন্ন সময় পুলিশকে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধেই। এদিন বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে এ কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী গোটা রাজ্যেই বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। এই বৈঠকেই জেলার আইনশৃঙ্খলার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাটোয়ায় মাঝেমধ্যেই সমস্যা হয়। মঙ্গলকোট, জামালপুর, কালনা এ সব জায়গায় কিছু গুন্ডাদের কার্যকলাপ আছে। বর্ধমান শহরেও কিছুদিন আগে হল্লা দেখলাম।’’
গত সপ্তাহেই পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশের কাজকর্ম নিয়ে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনও সেই ট্র্যাফিক আইন রক্ষা সংক্রান্ত অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রচুর টাকা নেওয়া হচ্ছে। বাড়ি থেকে ৪০০ টাকা নিয়ে বেরোলে আড়াইশো টাকা ট্রাফিক দিতে হচ্ছে। সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ মানে শুধু বিল কাটা নয়, প্রচার করতে হবে।’’ বৈঠকে উপস্থিত রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ পুরকায়স্থকে এ ব্যাপারে নজর দিতে বলেন।
থানার ওসি, বিডিও-র মতো স্থানীয় স্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের তাঁদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ওসি, বিডিওদের ভাল করে কাজ করতে হবে। আপনারা সরকারের প্রথম ধাপ। সব কিছুই মোবাইলে উঠছে। আগের মতো দিন নেই। সব রেকর্ডিং হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। বুঝে কাজ করতে হবে।’’