আক্রান্ত অফিসার ইনচার্জ সুব্রত ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমানে পুলিশকে মারধরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ বলতেই পারেন, এটা ঘিঞ্জি এলাকা। যুব আবাসে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করাটা ঠিক হয়নি। তা ওসি-কে বললেই হত। সেটা না করে মেরে পা ভেঙে দেওয়ার কি দরকার ছিল?” পাশাপাশি, ঘিঞ্জি এলাকায় কেন ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’ করা হয়েছিল সে প্রশ্ন তুলে, তা স্থানান্তরের নির্দেশ দেন তিনি।
অভিযোগ, পশ্চিম বর্ধমানের চুরুলিয়ায় যুব আবাসে মঙ্গলবার ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’ করা ও করোনা সংক্রান্ত গুজবের জেরে জনতার হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। মারধরে ডান পা ভাঙে অফিসার ইনচার্জ (জামুড়িয়া থানা) সুব্রত ঘোষের। আক্রান্ত হন আরও পাঁচ পুলিশকর্মী।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, চুরুলিয়া থেকে কেন্দ্রটি সরিয়ে অন্যত্র করার জন্য জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর সংযোজন: “ঘিঞ্জি এলাকায় কোয়রান্টিন কেন্দ্র করতে বলিনি। স্ট্যান্ডিং ইনস্ট্রাকশন আছে, ‘আইসোলেটেড’ এলাকায় তা করতে হবে। যেখানে উপায় নেই, সেখানে হাসপাতালে করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের ১৭০টি ‘হটস্পটে’-র মধ্যে এ রাজ্যের ৪ জেলা
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ১৭ জনের নতুন সংক্রমণ, সক্রিয় করোনা রোগী ১৩২ জন
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরে প্রশ্ন উঠেছে, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কেন ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’ তৈরি করেছিল জেলা প্রশাসন। চুরুলিয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুব আবাসের দু’শো মিটারের মধ্যে তিন-চারটি পাড়া রয়েছে। ওই পাড়াগুলিতে প্রায় আটশো বাড়ি রয়েছে।’’ তবে জেলাশাসক বলেন, “স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনের সবাই মিলে চুরুলিয়ার ওই এলাকায় কোয়রান্টিন কেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে চুরুলিয়ার ‘কোয়রান্টিন কেন্দ্র’-এ থাকা ১৯ জনকে অন্যত্র সরানো হয়েছে।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে বোমার টুকরো মিলেছে। এলাকায় লাগাতার অভিযান চলছে।’’ মঙ্গলবারের ঘটনায় রাতেই চুরুলিয়ার ১৮ থেকে ৩৬ বছর বয়সের চার জন মহিলা-সহ আট জনকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান এসিপি (সেন্ট্রাল) তথাগত পাণ্ডে। ধৃতদের বুধবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ দিন গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, অন্তত পাঁচটি পাড়া কার্যত জনশূন্য। বাড়ি-বাড়ি তালা ঝুলছে। ওসি সুব্রতবাবু-সহ ছ’জনকেই রানিগঞ্জের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসকেরা জানান, সবার অবস্থা স্থিতিশীল। এক জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)