Mamata Banerjee at Alipurduar

শস্যবিমা প্রসঙ্গে আশ্বাস মমতার, পাল্টা বিজেপির

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার ও ধুবুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৫
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যাঁদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের শস্যবিমার টাকা রাজ্য সরকার দ্রুত মিটিয়ে দেবে বলে ফের আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করা যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। দক্ষিণ-পূর্ব ভারতে সাম্প্রতিক ঘূর্ণাবর্তের জেরে এ রাজ্যেও অসময়ের বৃষ্টি হয়েছে। দুর্যোগের পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও রাজ্য প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেয়নি বলে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, তাঁর সরকার কৃষকদের পাশেই আছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অবশ্য দাবি, লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে ‘বোকা বানানোর চেষ্টা’ করছেন।

Advertisement

আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভায় রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘‘বৃষ্টিতে যাঁদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সেই কৃষক বন্ধুদের বলছি, শস্যবিমার টাকা সরকার এখন নিজে দেয়। তাই আপনাদের যাঁদের শস্যবিমা রয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই টাকা পাবেন। আগামী ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলা ‘দুয়ারে সরকারে’ (শিবির) দরখাস্ত করবেন। এবং আমরা ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে যতটা পারব চেষ্টা করব অধিকাংশটাই ছেড়ে দিতে।’’ তাঁর আরও ঘোষণা, আগামী ১২ ডিসেম্বর এক কোটি ২০ লক্ষ চাষি ‘কৃষকবন্ধু’র টাকা ডাইরেক্ট বেনিফিট স্কিমে পাবেন। আলিপুরদুয়ারে ৯০ হাজার কৃষকের খরিফ মরসুমের টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। মঞ্চে উপস্থিত আধিকারিকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘বিশেষ শিবির করে ওঁদেরটা দেখতে হবে।’’

চাষিদের টাকা দেওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তা নিয়ে নদিয়ার ধুবুলিয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত পাল্টা বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের আগে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন। সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তো নরেন্দ্র মোদী টাকা দেন। চাষিরা তাঁর ফসলের দাম পাচ্ছেন? বহু জায়গায় ফসল নিয়ে যাওয়ার পরে মিল মালিকেরা কিনতে আসছেন না।’’ শুভেন্দুর সুরেই তাঁর ফের অভিযোগ, ‘‘কুইন্টাল প্রতি যেখানে দু’কেজি করে ধান বাদ দেওয়ার কথা, দেখা যাচ্ছে, কোথাও পাঁচ কেজি, কোথাও ১০ কেজি পর্যন্ত বাদ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোথায় কী করছেন? কৃষিমন্ত্রী কোথায়?’’

Advertisement

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগেও ফের সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘১০০ দিনের টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিচ্ছে না। ‘বাংলার বাড়ি’ তৈরির টাকা দেওয়াও ওরা বন্ধ করে দিয়েছে। এটা ওদের টাকা নয়। জিএসটি-র মধ্য দিয়ে সব কর কেন্দ্র তুলে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ ১০০ দিনের কাজ, রাস্তা তৈরির টাকা দিচ্ছে না। আমাদের অংশটাও দিচ্ছে না, যেটা এখান থেকে ওরা নিয়ে যাচ্ছে।’’ আগামী ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েছেন, সে কথা এ দিন ফের জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘আমরা চাই, গরিব মানুষের টাকা দাও। হয় টাকা দিন, না হলে গদি ছাড়ুন। হয় টাকা দিন, না হলে বিদায় নিন। আমার সঙ্গে কয়েক জন সাংসদও যাবেন (দিল্লি)। এক লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা আমাদের পাওনা রয়েছে কেন্দ্রের কাছ থেকে।’’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে চাইতেই পারেন বলে উল্লেখ করেও বিজেপির সুকান্তের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মামার বাড়ির আবদার নাকি! আপনার বাড়ি (থেকে) কেউ যদি টাকা নিয়ে যান বাজার করার জন্য, আর তিনি যদি বলেন হাজার টাকা খরচা হয়েছে— তা হলে কি আপনি মানবেন? সে রকম, কেন্দ্রের কাছ থেকে টাকা নিলে তার হিসেব দিতে হবে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতির আরও মন্তব্য, ‘‘আর গদি ছাড়ো মানে কী? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি গদিতে বসিয়েছেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement